পিঠাপুলিতে নগরে নবান্ন উৎসব
হেমন্তের শীত শীত সকালে মাটির চুলায় ঢেঁকিতে ভানা নতুন চালের গুঁড়া দিয়ে হরেক রকমের পিঠা তৈরি করেন গ্রামের গৃহস্থ ঘরের নারীরা। সেগুলো খেয়ে দিন শুরু হয় পরিবারের সদস্যদের। শহরে এই দৃশ্য অপরিচিত। তবে এই শহরেও নেওয়া যাবে হরেক রকমের পিঠার স্বাদ। ধানমন্ডির রবীন্দ্রসরোবরে শুরু হওয়া নবান্ন উৎসবে পিঠার স্বাদ নেওয়ার পাশাপাশি উপভোগ করা যাবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে শুরু হয়েছে তিন দিনের এই ‘প্রাণ চিনিগুঁড়া চাল নবান্ন উৎসব’। উৎসব উপলক্ষে রবীন্দ্রসরোবর সাজানো হয়েছে খড়ের তৈরি ছোট ছোট কুটির দিয়ে। সেখানে আছে ১২টি পিঠাঘর। সেখানে বিক্রি হচ্ছে লবঙ্গ লতিকা, পাকন, নকশি পাকন, ডিমচিতই, দুধচিতই, ঝালপোয়া, মালপোয়া, ভাজা পুলি, তালের পিঠা, গুড়ের ভাপা, ম্যারা পিঠা, খেজুরের গুড়ের পিঠা, বিবিখানা, ধানাপোরা, মালাই রোল পুরিসহ আরও কয়েক পদের পিঠা।
উৎসব প্রাঙ্গণের দক্ষিণ কোণে রাখা আছে ঢেঁকি ও ধান। চাইলে ঢেঁকিতে পা দিয়ে ধান ভানা যাবে। উৎসবে গেলে মো. সুমনের রঙিন পোশাক ও লম্বা টুপি দৃষ্টি আকর্ষণ করবে। তিনি উৎসবে বায়োস্কোপ দেখাচ্ছেন। এ ছাড়া উৎসবে বানরের খেলা দেখিয়ে শিশুদের আনন্দ দেন আফজাল শরীফ। তাঁর নির্দেশে নানান রকমের অঙ্গভঙ্গি করে মধু নামের বানরটি। পাশেই সাপের খেলা দেখান পারুল। উৎসব প্রাঙ্গণের উত্তর কোণে আছে নাগরদোলা। সেখানে চড়ে আনন্দে মাতছে শিশু ও কিশোরেরা।
উৎসবের প্রথম দিন সকালে ছিল সাংস্কৃতিক পর্ব। সকালে শিল্পীরা লোকগান পরিবেশন করেন। এ ছাড়া পথনাটক, একক ও দলীয় গান, নাচ, একক আবৃত্তি পরিবেশন করেন শিল্পীরা। বিকেলে ছিল মানিকগঞ্জের মহুয়ার পালা পরিবেশনা।
আজ দ্বিতীয় দিনে সকাল নয়টা থেকে শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা হবে। বিকেলে একক ও দলীয় সংগীত ও নাচ, একক আবৃত্তি আর সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর গীতি-আলেখ্য ইতিহাস কথা কও পরিবেশিত হবে। শনিবার উৎসবের শেষ দিনেও সকাল থেকেই থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বিকেলে থাকবে মাগুরার সমীরণ বাউল ও তাঁর দলের পরিবেশনা। নবান্ন উৎসবে সাংস্কৃতিক পর্ব পরিচালনা করছে সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী।
উৎসবের স্টলে মিলবে প্রাণ গ্রুপের চিনিগুঁড়া চাল, তেল, ঘরের ব্যবহার্য দৈনন্দিন পণ্য, প্রাণের ওয়াকার ব্যান্ডের জুতা।