নবনির্মিত ভবনের ছাদ চুইয়ে পড়ছে পানি
বগুড়ার ধুনট উপজেলায় মথুরাপুর ইউনিয়নের হিজুলী গ্রামে কমিউনিটি ক্লিনিকের নতুন ভবন নির্মাণের চার মাসের মধ্যে ছাদ চুইয়ে পড়ছে পানি। এতে নষ্ট হচ্ছে ওষুধ ও নানা আসবাব।
কমিউনিটি ক্লিনিকের ওই নতুন ভবনটি মাত্র চার মাস আগে কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ভবনটি নির্মাণে নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করা এবং কাজের মান খারাপ হওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এ সমস্যার প্রতিকার চেয়ে ওই ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) লিখিত আবেদন জানিয়েছেন। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, স্বাস্থ্যসেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে দেশের অন্যান্য স্থানের মতো উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নে ওই কমিউনিটি ক্লিনিকের কার্যক্রম শুরু হয়। কমিউনিটি বেসড হেলথ কেয়ার প্রকল্পের আওতায় ওই ক্লিনিকের একতলা ভবন নির্মাণের জন্য ২০১৭-১৮ অর্থবছরে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে ২৯ লাখ ৬৯ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে মেসার্স মজিবর রহমান কনস্ট্রাকশন নামে এক ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। শেরপুর উপজেলার হাসরা গ্রামের হেলাল উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি ভবনটি নির্মাণে সহযোগী ঠিকাদার হিসেবে তদারকির দায়িত্বে ছিলেন। তিনি নির্মাণকাজ শেষ করে ২০১৯ সালের জুন মাসে ভবনটি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তর করেন।
ওই ক্লিনিকের জমিদাতা হিজুলী গ্রামের আলী আকবর অভিযোগ করে বলেন, এ ভবনের নির্মাণকাজে রড ও ঢালাইয়ে সিমেন্টের পরিমাণ কম দেওয়া হয়েছে। ছাদ ঢালাইয়ে ইটের গুঁড়া মিশ্রিত কংক্রিট ও নিম্নমানের বালু ব্যবহার করার কারণে ছাদ চুইয়ে বৃষ্টির পানি পড়ছে। হিজুলী কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি আবু সুফিয়ান বলেন, ‘ভবন নির্মাণসংক্রান্ত কোনো বিষয় স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে আমাকে জানানো হয়নি। তদারকির দায়িত্বেও ছিলেন স্বাস্থ্য বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী ইউসুব আলী। যেনতেনভাবে কাজ করে ভবনটি হস্তান্তর করা হয়েছে। ভবন নির্মাণে ত্রুটি-বিচ্যুতি তুলে ধরে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে তিনি লিখিতভাবে জানিয়েছেন।’
নির্মাণকাজের তদারককারী হেলাল উদ্দিন দাবি করেন, কমিউনিটি ক্লিনিকের ভবনের কাজে কোনো অনিয়ম হয়নি। নতুন ভবনের ছাদ চুইয়ে বৃষ্টির পানি পড়ার বিষয়টি তাঁকে জানানো হয়নি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা হাসানুল হাছিব বলেন, এ ত্রুটির বিষয়টি জেলা স্বাস্থ্য প্রকৌশলীকে জানানো হয়েছে। স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী ইউসুব আলী দাবি করেন, ‘ভবনের ছাদ দিয়ে বৃষ্টির পানি পড়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে এ ধরনের সমস্যা হয়ে থাকলে সমাধান করা যাবে। নিম্নমানের কাজের বিষয়ে অভিযোগ সঠিক নয়।’