সন্ধ্যা নামতেই শুরু হয় মশার উৎপাত
‘মশার জ্বালাতনে সবাই অতিষ্ঠ। সন্ধ্যা নামতেই শুরু হয় মশার উৎপাত। মশারি না টানিয়ে দিনের বেলায়ও ঘুমানোর উপায় নেই।’ কথাগুলো যাত্রাবাড়ীর নবীনগর এলাকার বাসিন্দা সামসুল ইসলামের।
কেবল সামসুল ইসলাম নন, যাত্রাবাড়ী, ধলপুর, বিবির বাগিচা, মীরহাজীরবাগ ও গোলাপবাগের অনেক বাসিন্দার অভিযোগ, এলাকায় মশার উপদ্রব বেড়েছে। বিকেল থেকেই মশার উৎপাত বাড়ে। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে মশার জ্বালাতন বাড়ে।
গত মে মাসে দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ শুরু হয়। সরকারি হিসাবমতে, গত আগস্টে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়ে যায়। ডেঙ্গুর প্রকোপ কমে এসেছে। সেই সঙ্গে ডিএসসিসির মশকনিধন তৎপরতাও কমে গেছে।
গোলাপবাগের বাসিন্দা সালাহউদ্দিন রায়হান বলেন, মশার যন্ত্রণা বেড়ে যাওয়ায় তাঁরা বেশ সতর্ক থাকেন। বাসার দরজা-জানালা সব সময় বন্ধ করে রাখেন।
যাত্রাবাড়ী, ধলপুর ও বিবির বাগিচার বাসিন্দারা জানান, এসব এলাকায় সপ্তাহে অন্তত দুবার মশার ওষুধ ছিটানো হয়। আর মীরহাজীরবাগ ও গোলাপবাগের বাসিন্দাদের বক্তব্য, এসব এলাকায় সপ্তাহে একবারের বেশি মশকনিধনকর্মীদের দেখেন না তাঁরা। মশকনিধনকর্মীরা বিকেলে ফগার মেশিন দিয়ে ওষুধ ছিটিয়ে যান। তবে লোকজনের অভিযোগ, ফগার মেশিন দিয়ে ধোঁয়া ওড়ানো হলেও মশা আসলে তেমন মরে না। যেদিন ওষুধ ছিটানো হয়, সেদিন বরং রাস্তাঘাটের মশা ঘরে ঢুকে আরও বেশি কামড়ায়।
ধলপুর, বিবির বাগিচা ও গোলাপবাগ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের অধীন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবুল কালাম বলেন, ‘আমরা নিয়মিত ওষুধ ছিটাচ্ছি। তবে ওষুধ ছিটানোর ক্ষেত্রে আগের থেকে এখন কিছুটা শিথিলতা আছে। তবে মশকনিধনকর্মীরা আমাকে বলেছেন, আগের ওষুধের থেকে এখনকার ওষুধ বেশি কার্যকর।’
যাত্রাবাড়ী ডিএসসিসির ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের অধীন। মশার উপদ্রব সম্পর্কে জানতে ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দেলোয়ার হোসেনের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন ধরেননি।
মশার উপদ্রব সম্পর্কে জানতে চাইলে ডিএসসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা শরীফ আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘নতুন করে আমরা সার্ভে শুরু করেছি। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলো চিহ্নিত করা হচ্ছে। মশার উপদ্রব থামাতে গত সোমবার থেকে আমরা আবার নতুন করে বিশেষ অভিযান শুরু করেছি। ম্যালাথিয়ন ও ডেল্টামেথ্রিন নামে যে নতুন দুটি ওষুধ আনা হয়েছে, সেগুলোর ব্যাপারে কোনো অভিযোগ নেই। আমার জানামতে, এসব ওষুধে আশানুরূপ ফল মিলছে।’