যশোরের সেই নারীর স্বাস্থ্য পরীক্ষায় ধর্ষণের আলামত
যশোরের শার্শার সেই নারীকে ধর্ষণের প্রমাণ মিলেছে। তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রতিবেদনে ‘বীর্য’ পাওয়ার কথা জানানো হয়েছে। তবে সেখানে কার কার বীর্য রয়েছে, তা ডিএনএ পরীক্ষার প্রতিবেদনের পর নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। এ জন্য ডিএনএ নমুনা গতকাল বৃহস্পতিবার পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ঢাকার পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে।
ওই নারীর অভিযোগ, এক পুলিশ কর্মকর্তাসহ দুজন তাঁকে ধর্ষণ করেছেন। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন আরও দুজন।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক চিকিৎসক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘৩ সেপ্টেম্বর বিকেলে ধর্ষণের শিকার ওই গৃহবধূর আলামত সংগ্রহ করে তা পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়। সেখান থেকে পাওয়া প্রতিবেদনে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। কিন্তু সেই বীর্য কার বা কাদের, তা ডিএনএ পরীক্ষা ছাড়া বলা যাচ্ছে না। পুলিশের তত্ত্বাবধানে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য নমুনা ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।’
ধর্ষণের শিকার ওই নারী বাদী হয়ে শার্শা থানায় ধর্ষণের একটি মামলা করেন। ওই মামলার এজাহারভুক্ত তিনজনকে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে প্রধান অভিযুক্ত পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) খায়রুল আলমকে ওই মামলায় আসামি করা হয়নি। এরপরও তদন্তের স্বার্থে তাঁকে প্রত্যাহার করে যশোর পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে বলে দাবি জেলা পুলিশের।
জানতে চাইলে শার্শা থানার ওসি এম মশিউর রহমান বলেন, ‘এজাহারভুক্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতের কাছে পাঁচ দিনের রিমান্ডের জন্য আবেদন করা হয়েছে। আদালত রিমান্ড শুনানির জন্য ৮ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেছেন।’
যশোরের শার্শা উপজেলায় ২ সেপ্টেম্বর রাতে ওই গৃহবধূ নিজের ঘরেই ধর্ষণের শিকার হন। তাঁর অভিযোগ, এসআই খায়রুলসহ চারজন ওই রাতে তাঁর কাছে গিয়ে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। টাকা দিলে তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে দেওয়া ফেনসিডিলের মামলা ৫৪ ধারায় দেখিয়ে হালকা করে দেবেন বলে তাঁরা জানান। ফেনসিডিল মামলায় কারাগারে থাকা তাঁর স্বামীকে কীভাবে ৫৪ ধারায় দেবেন—এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে এসআই খায়রুল ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। এরপর খায়রুল ও কামরুল ওই নারীকে ঘরে নিয়ে ধর্ষণ করেন। পরদিন সকালে ওই নারী যশোর জেনারেল হাসপাতালে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য এলে বিষয়টি জানাজানি হয়।