গোলাগুলিতে দুই রোহিঙ্গা মাদক পাচারকারী নিহত: বিজিবি
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) জানিয়েছে, কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় গোলাগুলিতে দুই রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন। নিহত দুজন ইয়াবা পাচারকারী ছিলেন বলে জানায় বিজিবি। আজ বৃহস্পতিবার ভোররাতে উপজেলার উলুবনিয়ার গ্রামের পূর্ব পাশে নাফ নদী তীরসংলগ্ন কাঁটাখাল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
টেকনাফ-২ বিজিবির উপ-অধিনায়ক মেজর শরীফুল ইসলাম জোমাদ্দার প্রথম আলোকে তথ্যটির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। ঘটনাস্থল থেকে ৫০ হাজার ইয়াবা, দেশীয় একটি বন্দুক, তিনটি তাজা কার্তুজ, দুটি ধারালো কিরিচ উদ্ধার করা হয়। এ সময় একটি নৌকা জব্দ করা হয়েছে।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন হ্নীলার মোছনি রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবিরের বাসিন্দা নুর আলম (৩০) ও উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবিরের বাসিন্দা মোহাম্মদ সাকের (২২)। এ সময় বিজিবির দুই সদস্য সিপাহি মো. উজ্জ্বল হোসেন ও মো. মতিয়ার রহমান আহত হয়েছেন।
টেকনাফ ২ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ ফয়সল হাসান খান বলেন, হোয়াইক্যং ইউনিয়নের নাফ নদীসংলগ্ন কাঁটাখাল এলাকা দিয়ে ইয়াবার বড় চালান মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করবে—এমন তথ্যের ভিত্তিতে হোয়াইক্যং বর্ডার অবজারভেশন পোস্টের (বিওপি) বিশেষ টহল দল ওই এলাকায় অবস্থান নেয়। কিছুক্ষণ পরে কয়েকজন ইয়াবা পাচারকারী নাফ নদী পার হওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় বিজিবি টহল দলের উপস্থিতি টের পেয়ে ইয়াবা পাচারকারীরা অতর্কিতে গুলি ছোড়ে। এতে বিজিবির দুই সদস্য আহত হন।
আত্মরক্ষার্থে বিজিবিও পাল্টা গুলি চালায়। দুই পক্ষে তিন থেকে চার মিনিট গোলাগুলি চলে। পরে টহলদল ঘটনাস্থল তল্লাশি করে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দুই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে। তাঁদের টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সেখান থেকে আহত ব্যক্তিদের কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করার পরামর্শ দেন। কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন। মৃতদেহ দুটি কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।
টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক টিটু চন্দ্র শীল প্রথম আলোকে বলেন, আজ ভোররাতে বিজিবি চারজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। এঁদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁদের শরীরে তিনটি করে গুলির চিহ্ন দেখা গেছে। আহত দুই বিজিবি সদস্যকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সকালে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
অধিনায়ক ফয়সল হাসান খান জানান, এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
গত বছর ৪ মে থেকে দেশব্যাপী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযান শুরু হয়। এখন পর্যন্ত র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), পুলিশ, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) বন্দুকযুদ্ধ ও মাদকে প্রভাব বিস্তারসহ বিভিন্ন ঘটনায় কক্সবাজার জেলায় দুজন নারীসহ ১৪৯ জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে এক নারীসহ ২৯ জন রোহিঙ্গা।