ছাত্রলীগ নেতা বললেন, 'সাংবাদিক পেলেই গুলি করে মারব'
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের দুই নেতার বিরুদ্ধে গত শুক্রবার রাতে সাংবাদিকদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এর মধ্যে একজন সাংবাদিকের দিকে তেড়ে গিয়ে বলেছেন, ‘গুলি করব। বুলেট সাংবাদিক চেনে না, সাংবাদিক পেলেই গুলি করে মারব।’
অভিযোগ ওঠা ওই দুই নেতা হলেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শোয়েব হাসান ও সহসভাপতি মো. রাইহান। এর মধ্যে শোয়েব হাসান গতকাল বলেন, ‘আমি রাগের মাথায় এটা বলেছি।’ আর রাইহানকে ফোন দেওয়া হলেও পাওয়া যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিক ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার রাত পৌনে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম হল ও শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের ছাত্রলীগের কর্মীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় ক্যাম্পাসে কর্মরত সাংবাদিকেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ার সামনে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে ছাত্রলীগ নেতা ও মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী শোয়েব হাসান সাংবাদিকদের উদ্দেশ করে গালিগালাজ শুরু করেন এবং সাংবাদিকেরা ঘটনাস্থলে কেন এসেছেন, বলে চিত্কার করতে থাকেন। একপর্যায়ে তিনি সাংবাদিকদের সেখান থেকে চলে যেতে বলেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও যুগান্তর-এর প্রতিনিধি তানভীর সাকিব প্রতিবাদ করলে শোয়েব পুনরায় সাংবাদিকদের উদ্দেশ করে বলেন, ‘গুলি করব। বুলেট সাংবাদিক চেনে না, সাংবাদিক পেলেই গুলি করে মারব।’ এ সময় তাঁর সঙ্গে থাকা ছাত্রলীগের সহসভাপতি ও ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থী মো. রাইহান বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সমকাল প্রতিনিধি আবু বকর রায়হানকে মারার জন্য সদলবলে তেড়ে আসেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলামসহ শাখার জ্যেষ্ঠ নেতারা তাঁদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন।
রেজাউল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘কিশোরগঞ্জ জেলা সমিতি নিয়ে দুই নেতার মধ্যে ঝামেলা হয়। পরে আমরা মিটমাট করে দিই। সাংবাদিকদের তাঁরা এই কথা বলতে পারেন না। ছাত্রলীগ এই আদর্শ ধারণ করে না।’
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ইলিয়াস মিয়া বলেন, কেউ সাংবাদিকদের হুমকি বা লাঞ্ছিত করলে এর দায় ছাত্রলীগ নেবে না। তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন বলেন, গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে যারা অছাত্রসুলভ আচরণ করেছে এবং হুমকি দিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।