কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি
অবিরাম বর্ষণ ও উজানের ঢলে কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটেছে। আজ বুধবার সকালে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপদ সীমার ৩২ সেন্টিমিটার ও ধরলা নদীর পানি ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এ ছাড়া জেলার তিস্তা, দুধকুমার, হলহলিয়া, জিঞ্জিরাম, সোনাভড়িসহ ১৬টি নদ-নদীর পানি বাড়ায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। জেলার ৯ উপজেলার ৩৫টি ইউনিয়নে আড়াই শ গ্রামের ৩ লাখেরও বেশি মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার উজান থেকে নেমে আসা পানির প্রবল স্রোতে মোগলবাসা বাজার ও হোলখানা বাংটুর ঘাট এলাকায় তীর রক্ষা বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে হুমকির মুখে পরেছে বাজার ও হোলখানা ইউনিয়ন। পানি উন্নয়ন বোর্ড বালির বস্তা এবং বাঁশের পাইলিং দিয়ে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা চালাচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম জানান, কুড়িগ্রাম শহর রক্ষা বাঁধসহ যেখানে ঝুঁকি আছে স্থানীয় জনগণের সহায়তায় বালির বস্তা ও বাঁশের পাইলিং দিয়ে ভাঙন রোধ করছি। আপাতত কোনো সমস্যা নাই।
বন্যা কবলিত এলাকাগুলোতে দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট। নৌকা ও কলার ভেলায় চলাচল করছেন স্থানীয়রা। বন্ধ হয়ে গেছে ৮০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ইউনিয়ন পর্যায়ে ৩২টি কমিউনিটি ক্লিনিকের চারপাশে পানি ওঠায় ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসাসেবা। পানি বাড়তে থাকায় অনেক পরিবার ঘরবাড়ি ছেড়ে পার্শ্ববর্তী আবাসন, বাঁধে আশ্রয় নিচ্ছেন। শত শত একর পাটখেত তলিয়ে গেছে। গবাদিপশুর খাবার নিয়ে সংকটে পড়েছে কৃষক।
সদর উপজেলার চর রসুলপুর এলাকার কৃষক আবদুল কাদের বলেন, ‘নিজেদেরই খাবার ফুরিয়ে যাচ্ছে। ঘরে মাচা করে আছি। গরু, ছাগল, ভেড়া, হাঁস, মুরগি রাখি কোথায়।’
বন্যা কবলিত এলাকায় জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চাল, শুকনা খাবার ও প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী বিতরণ হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় কম বলে অভিযোগ দুর্গতদের। তবে, কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক আবু ছালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান জানান, বন্যা কবলিত উপজেলাগুলোতে দুই হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, দেড় শ’ মেট্রিকটন চাল ও ৩ লাখ ২৫ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।