জামালপুরে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী নারীর ভাতা আত্মসাতের অভিযোগ
জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় প্রতিবন্ধী এক নারীর ভাতার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে স্থানীয় একজন ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ওই নারীর নাম রাজিয়া খাতুন (৬৫)। তিনি উপজেলার চরআমখাওয়া ইউনিয়নের সবুজপাড়া গ্রামের মৃত তহর আলীর স্ত্রী। যাঁর বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ, তাঁর নাম সাহার আলী। তিনি ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি সদস্য সাহার আলী বলেন, ‘আমিই ওই নারীকে ভাতার কার্ডটি করে দিয়েছিলাম। ব্যাংকেও টাকা তুলতে নিয়ে গেছিলাম। তবে ওই নারীর কার্ড ব্যাংকে ছিল না। তাই টাকাও পায় নাই। পরে কার্ড দিতে চেয়েছি। ব্যক্তিগতভাবে এক হাজার টাকাও দিয়েছি। আমার বিরুদ্ধে কিছু লোক চক্রান্ত করে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছে।’
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, এক যুগ আগে রাজিয়া খাতুনের স্বামী তহর আলী মারা যান। বিধবা ওই নারী বর্তমানে অত্যন্ত অসহায় অবস্থায় আছেন। নানা রোগশোকে ধীরে ধীরে তাঁর দুই চোখের আলো নিভে গেছে। রাজিয়ার দুই ছেলেও হতদরিদ্র। তাঁরা ভ্যান চালিয়ে সংসার চালান। মায়ের নামে একটি প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড করার জন্য তাঁরা স্থানীয় ইউপি সদস্য সাহার আলীর কাছে ধরনা দেন। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে রাজিয়ার নামে একটি ভাতার কার্ড হয়। কিন্তু তাঁরা বিষয়টি জানতে পারেননি। কার্ডের টাকা কোথায় যায়, তাঁরা জানেন না। ইউপি সদস্যকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, কার্ড হয়নি।
রাজিয়া খাতুনের ছেলে মো. আজিবর বলেন, ‘আমরা সবাই অশিক্ষিত। গত দেড় বছর আগে হঠাৎ ইউপি সদস্য সাহার আলী তাঁর এক বোনকে বাড়িতে পাঠান আমার মাকে ব্যাংকে নিয়ে যাওয়ার জন্য। মাকে ব্যাংকে নিয়ে যান। ব্যাংকে নিয়ে কিছুক্ষণ রাখেন। পরে ব্যাংক ভবনের নিচে নেমে মাকে বলেন, কার্ড আসেনি। ব্যাংকে আপনার নাম নেই। তখন ওই ইউপি সদস্য আমার মায়ের হাতে ১ হাজার টাকা তুলে দেন।’
আজিবর পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, ব্যাংকে তাঁর মায়ের নামে ৭ হাজার ৫০০ টাকা এসেছিল। রাজিয়া খাতুন নামের একটি হিসাব বইও রয়েছে। কিন্তু তাঁর মা ভাতার কোনো টাকা পাননি। এতে আজিবরের ধারণা হয়, ইউপি সদস্য সাহার আলী হয়তো টাকাগুলো আত্মসাৎ করে আসছেন। এ অবস্থায় তিনি গত সপ্তাহে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দেন।
জানতে চাইলে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের মাঠ কর্মকর্তা সোহেল আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী রাজিয়া খাতুনের প্রতিবন্ধী ভাতার টাকা আত্মসাতের বিষয়ে আমরা একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’