সরিষাবাড়ীতে স্বেচ্ছাশ্রমে কাঁচা সড়ক মেরামত
জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে স্বেচ্ছাশ্রমে এক কিলোমিটার সড়ক মেরামত করা হয়েছে। উপজেলার বিলবালিয়া গ্রামের শতাধিক বাসিন্দা সড়ক মেরামতের এই কাজে অংশগ্রহণ করেন।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার মহাদান ইউনিয়নের বিলবালিয়া পূর্বপাড়া মণ্ডলবাড়ি মসজিদ থেকে হাজিবাড়ি পর্যন্ত এক কিলোমিটার সড়ক দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থায় আছে। বৃষ্টির পানিতে সড়কটির বিভিন্ন স্থান ভেঙে গিয়ে ছোটবড় অনেক গর্তের সৃষ্টি হয়। এতে যাতায়াতে ভোগান্তি পোহাচ্ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করছিল। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সড়কটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয়নি। এ অবস্থায় গ্রামবাসী বৈঠক করে স্বেচ্ছাশ্রমে সড়কটি মেরামতের সিদ্ধান্ত নেন।
গ্রামের লোকজনই রাস্তা মেরামতের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের ব্যবস্থা করেন। কেউ সহায়তা হিসেবে টাকা দেন। অন্যরা টাকা না দিতে পারায় বাঁশসহ বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে সহায়তা করেন। এরপর সবাই মিলে গত বৃহস্পতিবার থেকে স্বেচ্ছাশ্রমে সড়ক মেরামতের কাজ শুরু করেন।
সড়ক মেরামতের জন্য প্রথমে বাঁশের খুঁটি পুঁতে নেওয়া হয়েছে। এরপর বালুর বস্তা ফেলে ও গর্তে মাটি ভরাট করে দেওয়া হয়েছে। এখন সড়কটি মানুষজন ও যান চলাচলের জন্য উপযোগী হয়েছে।
বিলবালিয়া গ্রামের বাসিন্দা মো. আবদুল্লাহ (৫৭) বলেন, ‘এই সড়ক দিয়ে কেউ শহরে যেতে পারত না। সড়কে গর্তের কারণে এই সড়কে কোনো ভ্যানগাড়িও আসত না। তাই আমরা গ্রামবাসী মিলে নিজেরাই অর্থ সংগ্রহ করে এরপর স্বেচ্ছাশ্রম দিয়ে সড়ক মেরামত করেছি।’
এ সড়ক দিয়ে বিলবালিয়া গ্রামের পাশাপাশি উপজেলার খাগুড়িয়া, বরসরা, সেংগুয়া, বনগ্রাম, বালাসূতি, পাচনখালী ও বীরতারা গ্রামের ৮০ হাজার মানুষ যাতায়াত করে। সড়কটির দুরবস্থার কারণে সবাই খুবই কষ্টে ছিলেন। বিশেষ করে স্কুলগামী ছেলেমেয়েদের কষ্ট হচ্ছিল বেশি। এক কিলোমিটার সড়ক পেরোতেই এক ঘণ্টা সময় লেগে যাচ্ছিল। এখন সবারই কষ্ট লাঘব হয়েছে।
উপজেলার বরসরা গ্রামের আবুল হোসেন বলেন, ‘গর্তের জন্য সড়কে কেউ যাতায়াত করতে পারত না। বিলবালিয়া গ্রামবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে সড়কের মেরামতকাজ করছেন। আমরা সবাই এখন তার সুফল পাচ্ছি।’
স্থানীয় মহাদান ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান বলেন, ‘বরাদ্দের অভাবে অনেক সড়কই সময়মতো সংস্কার করা যাচ্ছে না। বিলবালিয়া গ্রামবাসীর কাছে আমি কৃতজ্ঞতা জানাই। তাঁরা নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে সড়কটি সংস্কার করে নিয়েছেন। তাঁদের এই দৃষ্টান্ত অন্যরাও অনুকরণ করবে বলে আমার বিশ্বাস।’
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) সরিষাবাড়ী উপজেলা প্রকৌশলী মুহাম্মদ শফিউল্লাহ খন্দকার বলেন, গ্রামবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে সড়কটি মেরামত করেছেন, এটি একটি ভালো উদ্যোগ। এখন সড়কটি পাকাকরণের উদ্যোগ নেবে এলজিইডি। এ জন্য শিগগিরই প্রাক্কলন করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে।