এক কিলোমিটারের ব্যবধানে দাম দ্বিগুণ
ইফতার শেষে কাঁচা তরকারির একটি বাজারে বিক্রেতা এক কেজি লম্বা বেগুনের দাম হাঁকছেন ৩০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ১৫ টাকা। প্রায় কাছাকাছি সময়ে এক কিলোমিটার দূরের আরেকটি বাজারে প্রতি কেজি বেগুনের দাম ৫০ ও ঢ্যাঁড়স ৩০ টাকা হাঁকা হয়। উৎপাদনকারী ও ক্রেতার মাঝখানে মধ্যস্বত্বভোগীর অস্তিত্বের কারণেই দামে এমন তারতম্য, বলছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাওনা বাজার ও এক কিলোমিটার দূরের মাওনা চৌরাস্তা কাঁচাবাজার ঘুরে সবজির দামের এই তারতম্য পাওয়া যায়। ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কের মাওনা চৌরাস্তায় অবস্থিত মাওনা চৌরাস্তা কাঁচাবাজার। এই বাজারের মাত্র এক কিলোমিটার পশ্চিমে মাওনা বাজার।
মাওনা বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ২০-৩০ টাকা, কচুর লতি ২০-২৫, কাঁকরোল ৩০-৩৫, চিচিঙ্গা ১০-১৫, পটোল ২০-২৫, করলা ২০-৩০, ধুন্দুল ১০, মিষ্টিকুমড়া মাঝারি ২৫-৩০, শিং মাছ ১৫০-৪০০, তেলাপিয়া ১০০-১৬০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। প্রায় একই সময় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে মাওনা চৌরাস্তা কাঁচাবাজারে কাঁচা মরিচ ৬০ টাকা, কচুর লতি ৬০-৭০, কাঁকরোল ৪০-৫০, চিচিঙ্গা ৩০-৪০, পটোল ৩৫-৪০, করলা ৪৫-৫০, ধুন্দুল ২৫-৩০, মিষ্টিকুমড়া মাঝারি ৪০-৬০, শিং মাছ ২৫০-৫০০, তেলাপিয়া ১৫০-১৮০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়।
স্বল্প দূরত্বে দামের এই পার্থক্যের বিষয়ে মোহাম্মদ আমিনুল নামে কাঁচা তরকারির এক ব্যবসায়ী জানান, গ্রামের সাধারণ কৃষক তাঁদের উৎপাদিত পণ্য সরাসরি মাওনা বাজারে নিয়ে যান। তাঁরা সরাসরি ক্রেতার কাছে বিক্রি করেন। ফলে দাম কম হয়। কিন্তু একই পণ্য দু-একজন মধ্যস্বত্বভোগীর হাত হয়ে মাওনা চৌরাস্তায় যায় বলে সেখানে দামটা বেশি পড়ে। আরেক ব্যবসায়ী জহির মিয়া জানান, মাওনা বাজারে আশপাশের গ্রাম থেকে প্রচুর সবজি আসে। তা ছাড়া এই বাজারে বসার জায়গার ভাড়া অনেক কম। অথচ মাওনা চৌরাস্তা কাঁচাবাজারে বসার জায়গার ভাড়া অনেক বেশি।
উপজেলার চকপাড়া গ্রামের সবজিচাষি সিদ্দিকুর রহমান জানান, তাঁদের সবজি কিনে আড়তে নিয়ে যান পাইকারেরা। সেখান থেকে শহরের কাঁচাবাজারে নিয়ে অনেক বেশি দামে বিক্রি করা হয়। পাইকার থেকে শুরু করে খুচরা বিক্রেতারা লাভ ঠিকই করতে পারছেন।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফাতেমাতুজ জোহরা গতকাল শুক্রবার বলেন, কাঁচাবাজারের মূল্যের এই পার্থক্যের বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হবে।