ফুটপাতের পুরোটাই দখল
পশ্চিম আগারগাঁওয়ের জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরের বিপরীত পাশে জনতা হাউজিং সড়কের আমেনা–মদিনা টাওয়ার পর্যন্ত রাস্তার ডান পাশে আধা কিলোমিটারের বেশি ফুটপাত পুরোটাই দখল হয়ে গেছে। এখন ফুটপাতের বেশির ভাগে রিকশা–ভ্যান ও ভাঙারি পণ্য রাখা হচ্ছে। গড়ে তোলা হয়েছে অসংখ্য অস্থায়ী দোকান। এমনকি নর্দমা থেকে তোলা ময়লা–আবর্জনা ফুটপাতে স্তূপ করে রাখা হয়েছে।
জাতীয় বিজ্ঞান জাদুঘরের বিপরীত পাশের এই সড়ক ধরে সহজে রোকেয়া সরণিতে পৌঁছানো যায়। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, ফুটপাত দখল হয়ে যাওয়ার কারণে তাঁদের স্বাভাবিক চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। এতে এই সড়কে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। কারণ, ফুটপাতে গড়ে তোলা দোকানগুলোতে চা–পানের জন্য অনেকে সড়কে যানবাহন রেখে দাঁড়ান। এ ছাড়া সড়কে পিকআপ ভ্যান কিংবা ছোট ট্রাক রেখেই ফুটপাত থেকে ভাঙারি পণ্য ওঠানো–নামানোর কাজ করা হয়।
গত সোমবার দুপুরে দেখা যায়, এই আধা কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ফুটপাতের কয়েকটি জায়গায় নর্দমা থেকে তোলা আবর্জনা স্তূপ করে রাখা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি দোকান পানির ট্যাংকের মোড় ও জনতা হাউজিং মোড় এলাকায়। সব মিলিয়ে দোকানের সংখ্যা ২০টির বেশি। আমেনা–মদিনা টাওয়ারের কাছাকাছি লালু মার্কেটের সামনের অংশে বস্তাভর্তি ভাঙারি পণ্য ফুটপাতে রাখা। বাকি অংশ চলে গেছে রিকশা আর ভ্যানের দখলে।
কথা হয় লালু মার্কেটের এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমি এই এলাকার বাসিন্দা। আমারও ইচ্ছা করে ফুটপাত ধরে বাচ্চাকে নিয়ে হাঁটতে। কিন্তু ফুটপাত দখলমুক্ত রাখার ব্যাপারে সিটি করপোরেশন কিংবা পুলিশ কারোরই কোনো আন্তরিকতা নেই। সিটি করপোরেশন নিজেই ড্রেন থেকে তোলা ময়লা ফুটপাতে রেখেছে। আর পুলিশ ফুটপাতের সব দোকান থেকে টাকা পায়।’
এই মার্কেটের সোনাই এন্টারপ্রাইজ নামের এক ভাঙারি পণ্যের দোকানে কথা হয় ব্যবস্থাপক সুমনের সঙ্গে। সুমন বলেন, ‘আমরা ফুটপাত থেইক্যা মাঝে–মইধ্যে মাল সরায়া ফেলি। কিন্তু অন্যরা তো সরায় না। তাইলে তো কোনো লাভ হইলো না। সবাই যদি একসঙ্গে ফুটপাত ছাড়ত, তাইলে একটা কথা ছিল।’
এই এলাকাটি পড়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের আওতায়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. ফোরকান হোসেন হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ‘সকালে দোকান তুলি তো বিকেল বসে যায়। তাই অভিযান চালিয়েও কোনো লাভ হয় না।’ তাহলে এর সমাধান কোথায়?—এমন প্রশ্নের জবাবে এই জনপ্রতিনিধি বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে পুলিশকে সহযোগী ভূমিকা পালন করতে হবে। আমরা তুলে দেওয়ার পর আবার যেন ফুটপাত কেউ দখল করতে না পারে, সেটা দেখভাল করতে হবে।’ এ ছাড়া ফুটপাতে রাখা আবর্জনার স্তূপ সম্পর্কে তিনি বলেন, এই ময়লা তোলা হয়েছে ফুটপাতের নিচের ড্রেন থেকে। না শুকানো পর্যন্ত সরানো যাচ্ছে না। সড়ক সরু হওয়ার কারণে রাস্তাতেও রাখা যাচ্ছে না। তিনি আরও বলেন, ‘এই ফুটপাতের জায়গায় জায়গায় ভাঙা। হাঁটার পরিবেশ নেই। তাই পুরো ফুটপাত সংস্কারের জন্য ইতিমধ্যে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। খুব দ্রুত কাজ শুরু হবে। আমাদের জোর চেষ্টা থাকবে সংস্কারের পর এটা যেন আবার দখল না হয়ে যায়।’