আপত্তিকর ছবি ছড়িয়ে দেওয়ায় আত্মহত্যা
ভুয়া ব্যাংকার সেজে প্রেমের সম্পর্ক স্থাপন। এরপর বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর যোগাযোগ বন্ধ করে দেন মেয়েটি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ছেলেটি আপত্তিকর কিছু ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেন। এই অবস্থায় আত্মহত্যার পথ বেছে নেন মেয়েটি। হবিগঞ্জে এক কলেজছাত্রীর আত্মহত্যার নেপথ্যে এমন কারণ বেরিয়ে এসেছে।
চম্পা বণিক (২২) নামের ওই ছাত্রী হবিগঞ্জ শহরের চৌধুরী বাজার (কামারপট্টি) এলাকার বাসিন্দা। তিনি বৃন্দাবন সরকারি কলেজের সম্মান তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। ২ এপ্রিল বিকেলে নিজ ঘরে গলায় ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় করা মামলার প্রধান আসামি দিপু ঘোষ ওরফে বাঁধন (২৫) ও তাঁর বড় ভাই যিশু ঘোষ (৩০) গত বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তার হন। তাঁরা ওই দিনই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, সম্প্রতি চম্পার বড় ভাই শুভ বণিকের বিয়ে হয়। ওই বিয়ের অনুষ্ঠানে দিপু ঘোষের সঙ্গে পরিচয় হয় চম্পার। এ সূত্র ধরে পরে দুজন মুঠোফোনে কথা বলা শুরু করেন। একপর্যায়ে তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দিপু নিজেকে একজন ব্যাংক কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দেন। কিন্তু একসময় চম্পা জানতে পারেন, দিপু ব্যাংকার নন। এমনকি তিনি কোনো চাকরিই করেন না। এই অবস্থায় চম্পা তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। কিন্তু দিপু তাঁর পিছু ছাড়েননি। প্রায়ই মুঠোফোনে বিরক্ত করতেন। এমনকি চম্পাকে ভয় দেখাতেন, তাঁর কথা না শুনলে তাঁদের ব্যক্তিগত ছবিগুলো ইন্টারনেটে ছেড়ে দেবেন।
২ এপ্রিল বিকেলে চম্পার মৃত্যুর পর ১০ এপ্রিল থানায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা করেন তাঁর বড় ভাই শুভ বণিক। তিনি বলেন, তাঁর বোনের বিয়ের আলোচনা চলছিল। ঠিক এ সময় চম্পাকে নিয়ে কিছু ছবি ইন্টারনেটে ছেড়ে দেন দিপু। দিপু ও চম্পার মধ্যে মুঠোফোনে কথাবার্তা ও খুদে বার্তা থেকে বিষয়টি তাঁরা নিশ্চিত হয়েছেন জানিয়ে শুভ বলেন, তাঁরা বিষয়টি দিপুর বড় ভাই যিশুকে জানিয়েছিলেন। তবে তিনি কোনো গুরুত্বই দেননি। উল্টো তাঁর ভাইয়ের সঙ্গে চম্পার বিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দেন। মামলার প্রধান আসামি দিপু ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেন, কিছু ব্যক্তিগত ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি আরও কিছু ছড়ানোর ভয় দেখিয়েছিলেন।
হবিগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সহিদুর রহমান বলেন, বর্তমানে দিপু ও তাঁর ভাই যিশু কারাগারে আছেন।