'বয়ান শুনে উগ্রবাদী মতাদর্শে ঝুঁকে পড়েন সাকিব'
জঙ্গি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে নারায়ণগঞ্জে এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার ওই যুবকের নাম নাজমুস সাকিব (৩০)। গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে নারায়ণগঞ্জ শহরের লঞ্চঘাট এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১১ এর একটি দল। র্যাবের দাবি, বয়ান শুনে উগ্রবাদী মতাদর্শে ঝুঁকে পড়েন সাকিব।
র্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গ্রেপ্তার যুবকের নাম মো. তরিকুল ইসলাম ওরফে তারেক ওরফে বাপ্পী ওরফে সাকিব ওরফে নাজমুস সাকিব। তিনি নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান। গ্রেপ্তারের সময় তাঁর কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ উগ্রবাদী বই, উগ্রবাদী লিফলেট, প্রশিক্ষণ ম্যানুয়াল ও একটি চাপাতি উদ্ধার করা হয়।
আজ শনিবার এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান র্যাব-১১–এর অধিনায়ক (সিও) লে কর্নেল কাজী শামশের উদ্দিন। নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজীতে র্যাব-১১–এর প্রধান কার্যালয়ে এই ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, সাকিব ২০০৪ সালে বাগেরহাটের কচুয়া থানার মাধবকাঠি আহমাদিয়া ফাজিল মাদ্রাসা থেকে দাখিল, ২০০৬ সালে খুলনার সিদ্দিকীয়া কামিল মাদ্রাসা থেকে আলিম, ঢাকার মদিনাতুল উলুম বালক কামিল মাদ্রাসা থেকে ২০১০ সালে ফাজিল এবং ২০১৩ সালে কামিল পাস করেন। একই সঙ্গে সাকিব ২০১১ সালে আহসান উল্লাহ ইউনির্ভাসিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি থেকে বিবিএ ডিগ্রি নেন। ২০১৩ সালে এমবিএতে পড়ার সময় জসিম উদ্দিন রাহমানির বছিলা মসজিদে বয়ান শুনতে যেতেন তিনি। এই বয়ান শুনে উগ্রবাদী মতাদর্শে ঝুঁকে পড়েন সাকিব। তৎকালীন জেএমবির দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান জেএমবি নেতা আবদুল্লাহ আল মামুনের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। মামুনের মাধ্যমে ২০১৩ সালে সাকিব জেএমবিতে যোগ দেন। ২০১৬ সালে বাগেরহাট জেলা পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মামুন মারা যান। মামুনের দায়িত্ব দেওয়া হয় সাকিবকে। দায়িত্ব পেয়ে সাকিব খুলনা, বাগেরহাট, বরগুনা, পিরোজপুর, যশোরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় জেএমবির কর্মী সংখ্যা বাড়ানোর তৎপরতা শুরু করেন। তাঁর মাধ্যমে প্রায় অর্ধশত ব্যক্তি জেএমবিতে যোগ দেন। তাদের মধ্যে অধিকাংশই বিভিন্ন সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হন।
র্যাব-১১–এর অধিনায়ক আরও বলেন, সাকিব প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানান যে তিনি জেএমবির সামরিক শাখার সদস্য হিসেবে প্রথমে জামালপুরের যমুনা নদীর চর, আবদুল্লাহ আল মামুনের বাসার ছাদসহ বিভিন্ন জায়গায় অস্ত্র প্রশিক্ষণ নেন। ২০১৭ সালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যাপক তৎপরতা শুরু হলে সাকিব ঢাকায় আত্মগোপন করেন। সে সময় দক্ষিণাঞ্চলের পাশাপাশি ঢাকা ও আশপাশের জেলাগুলোয় সদস্য সংগ্রহ করে জেএমবিকে পূর্ণগঠনের চেষ্টা করেন। জামালপুরের যমুনা নদীর চরে জেএমবির নতুন একটি প্রশিক্ষণ শিবির খোলার কথা ছিল তাঁর। সাকিবের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস বিরোধী আইন ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মোট আটটি মামলা রয়েছে।