দেশে প্রথম ১৪০ কিমি. গতিতে ট্রেন চলবে
দেশে এই প্রথম চলবে ব্রডগেজ (বড়) লাইনের ১৪০ কিলোমিটার গতিসম্পন্ন আধুনিক ট্রেন। এ জন্য ৫০টি কোচ আনা হচ্ছে ইন্দোনেশিয়া থেকে। এর ১৫টি দুই-এক দিনের মধ্যেই এসে পৌঁছাবে দেশের বৃহত্তম সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায়।
রেলওয়ে সূত্রে জানায়, ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন রেল ক্যারেজ (কোচ) নির্মাণ প্রতিষ্ঠান পিটি ইন্ডাস্ট্রি কেরেতা এপি (ইনকা) ওই কোচগুলো তৈরি করেছে। ইন্দোনেশিয়ার ওই প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের জন্য এরই মধ্যে ২৫০টি কোচ নির্মাণ করেছে। যার ২০০টি মিটারগেজ (ছোট) ও ৫০টি ব্রডগেজ (বড়) লাইনের। ব্রডগেজ লাইনের ৫০টি কোচ আমদানিতে ব্যয় ধরা হয়েছে ২১৩ কোটি টাকা। আর প্রতিটি কোচের গড় দাম পড়েছে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা।
দেশে এখন ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১২০ কিলোমিটার গতির ট্রেন চলে।
সূত্রে জানা গেছে, এরই মধ্যে আমদানি চালানের ১৫টি কোচ জাহাজযোগে চট্টগ্রাম বন্দরে আনা হয়েছে। পরে কোচগুলো গতকাল শনিবার ঢাকা টঙ্গী জংশনে বিশেষ ব্যবস্থায় আনা হয়। সেখান থেকে ট্রান্সশিপমেন্ট (স্থানান্তর) করে ব্রডগেজ লাইনে সৈয়দপুরে আনা হবে।
সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক (ডিএস) জয়দুল ইসলাম বলেন, আধুনিক ওই কোচগুলো দুই–এক দিনের মধ্যে সৈয়দপুর কারখানায় এসে পৌঁছাবে। এখানে এসবের ডি-প্রসেসিং (রক্ষণাবেক্ষণ) এবং যাবতীয় যান্ত্রিক নিরীক্ষা সম্পন্ন হবে। এরপর লোড ম্যানেজমেন্ট ঠিক আছে কি না, তা দেখার জন্য হবে ট্রায়াল রান (পরীক্ষামূলক দৌড়)। আর সব রকম নিরীক্ষা শেষে এসব চলে যাবে রেলপথে।
রেলওয়ে ট্রাফিক বিভাগ জানায়, আধুনিক ও দ্রুতগতিসম্পন্ন ওই কোচের পুরো চালান দেশে এসে পৌঁছালে তা দিয়ে চালানো হবে বেশকটি ট্রেন। অত্যন্ত পুরোনো কোচ দিয়ে যেসব আন্তনগর ট্রেন চলছে, সেসবে প্রতিস্থাপন হবে ওই কোচগুলো। আগামী তিন মাসের মধ্যে কোচগুলো ব্যবহার হবে নতুনভাবে ট্রেন বহরে। তবে কোন রুটে গতিময় ট্রেনের সেবা দেওয়া হবে, সে বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
কোচগুলোর বিশেষত্ব সম্পর্কে রেলওয়ের প্রধান যন্ত্র প্রকৌশলী (সিএমই) হারুনুর রশিদ বলেন, আমদানি করা কোচগুলো সৈয়দপুর কারখানায় পৌঁছাতে দু-এক দিন লাগবে। এসব কোচ প্রতি মিনিটে ২.৩৩ গতিতে চলতে সক্ষম। ফলে ট্রেনের গতি হবে ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার। এর আসনও হবে বেশ আরামদায়ক। ওই ট্রেনবহর হবে দেশের সর্বোচ্চ গতিসম্পন্ন।
হারুনুর রশিদ বলেন, এই প্রথমবারের মতো বায়োটয়লেট যুক্ত থাকছে কোচগুলোতে। এত দিন ট্রেনের টয়লেট থেকে মানববর্জ্য রেলপথে পড়ত। কিন্তু ওই কোচে বিমানের মতো টয়লেট–সুবিধা থাকছে। ফলে রেললাইনে পড়বে না কোনো ময়লা। পরে ওই মানববর্জ্য বিশেষ ব্যবস্থায় সরিয়ে নেওয়া হবে। আর পুরো ট্রেন হবে জীবাণুমুক্ত।