একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৮৬টি আসনে ভোট পড়েছে ৮০ শতাংশের বেশি। এর মধ্যে ১৩টি আসনের ভোট ৯০ শতাংশেরও ওপরে। অন্যদিকে ৫০ শতাংশের নিচে ভোট পড়েছে মাত্র ৩টি আসনে। অন্যদিকে ৮০ শতাংশের নিচে ভোট পড়েছে ১১২টি আসনে।
নির্বাচনের ফলাফল বিবরণী পর্যালোচনা করে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
৯০ শতাংশের বেশি ভোটপড়া ১৩টি আসন হলো-রংপুর-৬ (৯০.৬৪ শতাংশ), বগুড়া-১ (৯১.০৪), সিরাজগঞ্জ-১ (৯৪.৫৯), টাঙ্গাইল-২ (৯০.৪১), জামালপুর-২ (৯০.৩৮), জামালপুর-৩ (৯২.৫৬), গোপালগঞ্জ-১ (৯৪.৯১), গোপালগঞ্জ-২ (৯০.৯৮), গোপালগঞ্জ-৩ (৯৩.২৪), মাদারীপুর-১ (৯৩.৪২), মাদারীপুর-২ (৯২.১২), শরিয়তপুর-১ (৯৩.৪৮) এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ (৯৩.৪৫ শতাংশ)।
৫০ শতাংশের নিচে ভোট পড়েছে খুলনা-২ আসনে ৪৯.৪১ শতাংশ, ঢাকা-৬ আসনে ৪৫.২৬ এবং ঢাকা-১৩ আসনে ৪৩.০৫ শতাংশ। এ তিনটি আসনে ইভিএমে ভোট হয়েছে।
খুলনা-২ আসনে ২ লাখ ৯৪ হাজার ১১৬ ভোটারের মধ্যে ভোট পড়েছে হয়েছে ১ লাখ ৪৫ হাজার ২১০ ভোট। তাতে আওয়ামী লীগ প্রার্থী শেখ সালাউদ্দিন পেয়েছেন ১ লাখ ১২ হাজার ১০০ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির নজরুল ইসলাম মঞ্জু পেয়েছেন ২৭ হাজার ৩৭৯ ভোট। ঢাকা-৬ আসনে জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ পেয়েছেন ৯৩ হাজার ৫৫২ ভোট। নিকটতম গণফোরামের সুব্রত চৌধুরী ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ২৩ হাজার ৬৯০ ভোট। ঢাকা-১৩ আসনে আওয়ামী লীগের সাদেক খান পেয়েছেন ১ লাখ ৩৩ হাজার ১৬৩ ভোট। বিএনপির আবদুল সালাম পেয়েছেন ৪৭ হাজার ২৩২ ভোট।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলকভাবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ হয়েছে ৬টি আসনে। তুলনামূলকভাবে এসব আসনে ভোটগ্রহণের হার কম। ইসি সচিবালয়ের তথ্য অনুযায়ী প্রতিটি আসনের কোথাও না কোথাও ইভিএমের ত্রুটির কারণে ভোটগ্রহণ বিলম্বিত বা বাধাগ্রস্ত হয়েছে।
ইভিএমে ভোট হওয়া অপর তিনটি আসনে ভোট পড়েছে চট্টগ্রাম-৯ আসনে ৬২.৮৭, রংপুর-৩ আসনে ৫২.৩১ এবং সাতক্ষীরা-২ আসনে ৫২.৮২ শতাংশ।
৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী পেয়েছে ২৫৭ আসন। দেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি পেয়েছে ৫ আসন। বর্তমান সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি পেয়েছে ২২ টি।
নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জয় একচেটিয়া। অল্প কিছু আসনে বিজয়ী প্রার্থীর সঙ্গে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীর প্রতিদ্বন্দ্বিতা লক্ষ করা গেছে।
অল্প কয়েকটি ছাড়া বেশির ভাগ আসনেই ক্ষমতাসীন দলের বিজয়ী প্রার্থীর সঙ্গে পরাজিত প্রার্থীদের ভোটের পার্থক্য অনেক।
জয়ী-পরাজিত প্রার্থীর মধ্যে ভোটের পার্থক্য কম যেসব আসনে:
পঞ্চগড়-১ আসনে আওয়ামী লীগের মাজহারুল হক প্রধান পেয়েছেন ১ লাখ ৭৩ হাজার ৮৮৮ ভোট। নিকটতম বিএনপির নওশাদ জমির পেয়েছেন ১ লাখ ৩২ হাজার ৫৩৯ ভোট। পঞ্চগড়-২ আসনে আওয়ামী লীগের নুরুল ইসলাম সুজন পেয়েছেন ১ লাখ ৬৯ হাজার ৫১৪ ভোট। বিএনপির ফরহাদ হোসেন আজাদ পেয়েছেন ১ লাখ ১১ হাজার ৯৫ ভোট।
ঠাকুরগাঁও-১ আসনে আওয়ামী লীগের রমেশ চন্দ্র সেন পেয়েছেন ২ লাখ ২৫ হাজার ৫৯৮ ভোট। এই আসনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পেয়েছেন ১ লাখ ২৮ হাজার ৮০ ভোট। ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে বিএনপির জাহিদুর রহমান ৮৮ হাজার ৫১০ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী ইমদাদুল হক পান ৮৪ হাজার ৩৯৫ ভোট। দিনাজপুর-৫ আসনে আওয়ামী লীগের মোস্তাফিজুর রহমান পেয়েছেন ১ লাখ ৮৮ হাজার ৬৮৩ ভোট। বিএনপির এ জেড এম রেজওয়ানুল হক পেয়েছেন ১ লাখ ২৮ হাজার ৫৬৭ ভোট।
কুড়িগ্রাম-১ আসনে আওয়ামী লীগের আছলাম হোসেন সওদাগর ১ লাখ ২১ হাজার ৯০১ ভোট। বিএনপির সাইফুর রহমান রানা পান ১ লাখ ১৮ হাজার ১৩৪ ভোট।
বগুড়া-৪ আসনে বিএনপির মোশাররফ হোসেন পান ১ লাখ ২৮ হাজার ৫৮৫ ভোট। জাসদের রেজাউল করিম তানসেন পান ৮৬ হাজার ৪৮ ভোট।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ আসনে আওয়ামী লীগের সামিল উদ্দিন পান ১ লাখ ৮০ হাজার ৭৮ ভোট। বিএনপির শাহজাহান মিয়া পান ১ লাখ ৬৩ হাজার ৬৫০ ভোট। চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে বিএনপির আমিনুল ইসলাম পার ১ লাখ ৭৫ লাখ ৪৬৬ ভোট। আওয়ামী লীগের জিয়াউর রহমান পান ১ লাখ ৩৯ হাজার ৯৫২ ভোট। চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনে আওয়ামী লীগের আবদুল ওদুদ পান ৮৫ হাজার ৯৩৮ ভোট। বিএনপির হারুনুর রশীদ পান ১ লাখ ৩৩ হাজার ৬৬১ ভোট।
নওগাঁ-১ আসনে আওয়ামী লীগের সাধন চন্দ্র মজুমদার পান ১ লাখ ৮৭ হাজার ২৯০ ভোট। বিএনপির মোস্তাফিজুর রহমান ১ লাখ ৪২ হাজার ৫৬। নওগাঁ-৩ আসনে আওয়ামী লীগের ছলিম উদ্দিন তরফদার পান ১ লাখ ৯০ হাজার ৫৮১ ভোট। বিএনপির পারভেজ আরেফিন সিদ্দিকী পান ১ লাখ ৩৬ হাজার ২৩ ভোট।
রাজশাহী-২ আসনে আওয়ামী লীগের ফজলে হোসেন বাদশা পান ১ লাখ ১৫ হাজার ৪৫৩ ভোট। বিএনপির মিজানুর রহমান মিনু পান ১ লাখ ৩ হাজার ৩২৭ ভোট। বরিশাল-৩ আসনে জাতীয় পার্টির গোলাম কিবরিয়া টিপু পান ৫৪ হাজার ৭৭৮ ভোট। বিএনপির জয়নাল আবেদীন পান ৪৭ হাজার ২৮৭ ভোট।
টাঙ্গাইল-৮ আসনে আওয়ামী লীগের জোয়াহেরুল ইসলাম ৫৮ হাজার ৯৮৭ ভোট। কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের কুঁড়ি সিদ্দিকী পান ৪৪ হাজার ৭৩৫ ভোট। মৌলভীবাজার-২ আসনে গণফোরামের সুলতান মোহাম্মদ মনসুর পান ৭৯ হাজার ৭৪২ ভোট। বিকল্পধারার এম এম শাহীন পান ৭৭ হাজার ১৭০ ভোট।
কুমিল্লা-১ আসনে আওয়ামী লীগের সুবিদ আলী ভূঁইয়া পান ১ লাখ ৩৫ হাজার ৮৭৩ ভোট। বিএনপির খন্দকার মোশাররফ হোসেন পান ৯৫ হাজার ৫৪২ ভোট।