যুবলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে যুবলীগের এক নেতা নিহত হয়েছেন। অভিযোগ উঠেছে, সাংসদ দিদারুল আলমের অনুসারীরা তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। আজ সোমবার বিকেল চারটার দিকে সীতাকুণ্ড সদরের ভোলাগিরী রাস্তার মাথায় এই ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তির নাম দাউদ সম্রাট (৩০)। তিনি সীতাকুণ্ড পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি। এ ঘটনায় আহত ব্যক্তির নাম সাজ্জাদ হোসেন। তিনি পৌর যুবলীগের সদস্য। হতাহতরা উপজেলা চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবলীগের সভাপতি এসএম আল মামুনের অনুসারী বলে পরিচিত।
দলীয় সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম-৪ আসনের সাংসদ দিদারুল আলমের সঙ্গে সীতাকুণ্ড উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান যুবলীগ নেতা এসএম আল মামুনের দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। পুলিশ বলছে, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এই হত্যাকাণ্ড হয়েছে, নির্বাচনী কোনো সহিংসতা নয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, হতাহতদের ওপর শহীদুল ইসলাম ওরফে শহীদ ডাকাত দলবল নিয়ে হামলা চালিয়েছে। শহীদকে সাংসদের অনুসারী বলে উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক দাবি করেছেন। তবে শহীদকে সাংসদ দিদারুল সরাসরি নিজের অনুসারী বলতে নারাজ। তাঁর দাবি, উভয় পক্ষই নির্বাচনে তাঁর জন্য কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেছিল।
যুবলীগ ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সাংসদ দিদারুল আলমকে অভিনন্দন জানাতে দলবল নিয়ে যাচ্ছিলেন শহীদ। এ সময় সম্রাটের পক্ষের একজনকে দেখতে পেয়ে ধাওয়া করে তাঁরা। খবর শুনে সম্রাট নিজেই শহীদের দলবলকে আটকাতে ভোলাগিরী রাস্তার মাথায় যায়। এ সময় শহীদ লোকজন সেখানে পৌঁছে সম্রাটকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপায়। এর পরপরই সেখানকার বটতল কালীবাড়ির কাছে সাজ্জাদকে পেয়ে তাঁকে কুপিয়ে আহত করে শহীদের লোকজন। পরে স্থানীয় লোকজন সম্রাট ও সাজ্জাদকে প্রথমে সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক সম্রাটকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত সাজ্জাদ সেখানে চিকিৎসাধীন।
সীতাকুণ্ড উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রবিউল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, সম্রাট নতুন সাংসদকে শুভেচ্ছা জানাতে তাঁর পক্ষের নেতা-কর্মীদের নিয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এ সময় শহীদ দলবল নিয়ে সম্রাটকে কুপিয়ে হত্যা করে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক জহিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, হাসপাতালে নেওয়ার আগেই সম্রাট মারা যান। আহত সাজ্জাদ চিকিৎসাধীন। মরদেহ মর্গে নেওয়া হয়েছে।
সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলওয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, শহীদ দলবল নিয়ে সম্রাটসহ দুজনের ওপর হামলা চালিয়ে আহত করেছে। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে তাঁর ধারণা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিল্টন রায় বলেন, দীর্ঘদিন ধরে দুই পক্ষের বিরোধ ছিল। নির্বাচনে তাঁরা মিলিতভাবে নৌকার পক্ষে কাজ করেছিল। এই সংঘর্ষ নির্বাচন কেন্দ্রিক নয়। এটি ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের কারণে হয়েছে বলে তাঁর ধারণা। তবুও আইনশৃঙ্খলা যাতে আর অবনতি না হয়, সে জন্য সেনাবাহিনী টহল দিতে শুরু করেছে।
সাংসদ দিদারুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, দুজনই (সম্রাট ও শহীদ) তাঁর নির্বাচনে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেছিল। তাঁরা উভয়েই আজ রাতে তাঁকে শুভেচ্ছা জানাতে আসার কথা ছিল। তিনি মনে করেন, বিষয়টি ব্যক্তিগত পর্যায়ের বিরোধ।