৩০ নেতার স্বজনেরাও প্রার্থী
সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন পাওয়া ৩০ জন প্রার্থী দলের বর্তমান বা প্রয়াত কোনো না কোনো নেতার আত্মীয়। এর মধ্যে ১৬ জন প্রার্থী দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের ছেলে বা মেয়ে।
পঞ্চগড়-১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পাওয়া নওশাদ জমির দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক স্পিকার জমিরউদ্দিন সরকারের ছেলে। যশোর–৩ আসনে মনোনয়ন পাওয়া অনিন্দ্য ইসলামের (অমিত) বাবা বিএনপির স্থায়ী কমিটির প্রয়াত সদস্য তরিকুল ইসলামের ছেলে।
মনোনয়ন পেয়েছেন বিএনপির সাবেক মহাসচিব প্রয়াত কে এম ওবায়দুর রহমানের মেয়ে শামা ওবায়েদও। তিনি ফরিদপুর-২ আসন থেকে
নির্বাচনে লড়বেন। বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক ডেপুটি স্পিকার প্রয়াত আখতার হামিদ সিদ্দিকীর ছেলে পারভেজ আরেফিন সিদ্দিকী প্রার্থী হয়েছেন নওগাঁ-৩ আসনে। স্থানীয় নেতা–কর্মীরা বলছেন রাজনীতিতে তিনি সক্রিয় ছিলেন না।
শেরপুর-১ আসনে মনোনয়ন পাওয়া সানসিলা জেবরিন, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. হজরত আলীর মেয়ে। আবার গাজীপুর-৪ আসনের প্রার্থী শাহ রিয়াজুল হান্নানের বাবা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য প্রয়াত হান্নান শাহ।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা হাসান উদ্দিন সরকারে চাচাতো ভাইও সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পেয়েছেন। গাজীপুর-২ আসন থেকে লড়বেন সালাহউদ্দিন সরকার।
প্রয়াত অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমানের ছেলে নাসের রহমান নির্বাচন করবেন মৌলভীবাজার-৩ আসন থেকে।
কুমিল্লা-৩ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন কে এম মজিবুল হক। তাঁর বড় ভাই বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক সাংসদ কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসাইন কায়কোবাদ। তিনি ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টুর ছোট ভাই আকবর হোসেন ফেনী-৩ আসন থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন। কুষ্টিয়া–৪ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পাওয়া মেহেদী আহমেদ রুমির বাবা দলের সাবেক সাংসদ মাসুদ রুমি।
বিএনপির নিখোঁজ নেতা ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদির (লুনা) নির্বাচন করছেন সিলেট-২ আসন থেকে। শেরপুর–২ আসনে বিএনপির প্রার্থী ফাহিম চৌধুরী। তাঁর বাবা বিএনপির সাবেক সাংসদ জাহেদ আলী।
সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের স্ত্রী তাহমিনা জামানও মনোনয়ন পেয়েছেন। তিনি নেত্রকোনা–৪ আসন থেকে নির্বাচন করছেন।
বিএনপি নেতা আমান উল্লাহ আমানের ছেলে ইকবাল ইবনে আমান (অনীক) দলের প্রার্থী হয়েছেন ঢাকা-২ আসনে। ঢাকা–১১ আসনে বিএনপির প্রার্থী শামীম আরা বেগম। তিনি ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সভাপতি এম এ কাইয়ুমের স্ত্রী।
মানিকগঞ্জ–২ আসনের বিএনপির প্রার্থী মঈনুল ইসলাম খান (শান্ত)। তিনি বিএনপির নেতা ও প্রয়াত শিল্পমন্ত্রী শামসুল ইসলাম খানের ছেলে।
মানিকগঞ্জ–৩ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক সাংসদ প্রয়াত বিএনপি নেতা হারুনার রশিদ খানের (মুন্নু) মেয়ে আফরোজা খান। আফরোজা খান জেলা বিএনপির সভাপতি।
কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদারের স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন নির্বাচন করবেন নাটোর-২ আসনে। কক্সবাজার-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী হাসিনা আহমেদ। তিনি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদের স্ত্রী।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ আসনের বিএনপির কাজী নাজমুল হোসেনের (তাপস) বাবা দলের সাবেক সাংসদ কাজী আনোয়ার হোসেন। কুষ্টিয়া–১ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন রেজা আহমেদ (বাচ্চু মোল্লা)। তিনি সাবেক সাংসদ আহসানুল হকের (পচা মোল্লা) ছেলে। মেহেরপুর–১ আসনে দলের প্রার্থী মাসুদ অরুণ। তাঁর বাবা সাবেক সাংসদ আহমদ আলী।
ভোলা–১ আসনে এবার মনোনয়ন পেয়েছেন গোলাম নবী আলমগীর। তিনি সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মোশারেফ হোসেন শাহজাহানের ছোট ভাই।
কুড়িগ্রাম–৩ আসনে বিএনপির প্রার্থী তাসভীর উল ইসলাম। তাঁর বড় ভাই বিএনপির নেতা প্রয়াত মাঈদুল ইসলাম। তিনি এরশাদ সরকারের সময়ও মন্ত্রী ছিলেন।
রংপুর জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক সাংসদ রহিম উদ্দিন ভরসার ছেলে এমদাদুল হক ভরসাও বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন। তিনি রংপুর-৪ আসন থেকে নির্বাচন করবেন।
ঢাকা–৯ আসনে বিএনপির প্রার্থী আফরোজা আব্বাস। তিনি বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য মির্জা আব্বাসের স্ত্রী। এ ছাড়া নীলফামারী-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী করা হয়েছে রফিকুল ইসলাম চৌধুরীকে। তিনি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ভগ্নিপতি।
সিরাজগঞ্জ–২ আসনে বিএনপির প্রার্থী রুমানা মাহমুদ দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইকবাল হাসান মাহমুদের স্ত্রী। এ ছাড়া বগুড়া–৩ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পাওয়া মাছুদা মোমিন দলের সাবেক সাংসদ আবদুল মোমিনের স্ত্রী।