ইসিতে ৩১০ জনের আপিল নিষ্পত্তি, সার্টিফায়েড কপি না পেয়ে ক্ষুব্ধ প্রার্থীরা
আপিল নিষ্পত্তি হওয়া প্রার্থীদের এখনো পর্যন্ত কাউকেই সার্টিফায়েড কপি দিতে পারেনি নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সকাল থেকে অপেক্ষা করেও সার্টিফায়েড কপি না পেয়ে প্রার্থী ও তাঁদের সমর্থকেরা ইসির সামনে অবস্থান করছেন। এ সময় অনেকে ইসির প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিভিন্ন দলের এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মনোনয়ন যাচাই–বাছাই শেষে বৈধ ও অবৈধ ঘোষণা করেছিল ইসি। গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে এসব প্রার্থীর করা আপিলের শুনানি শুরু হয়। আপিলের শুনানিতে অনেকে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন, অনেকে পাননি। উভয় ধরনের প্রার্থীর জন্যই সার্টিফায়েড কপির প্রয়োজন। কারণ, যেসব প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ হয়েছে, সেসব প্রার্থীর আপিলের সার্টিফায়েড কপি নিজ নিজ দলে জমা দিতে হবে। আর যাঁদের মনোনয়নপত্র অবৈধ বলে রায় হয়েছে, তাঁরা আপিলের সার্টিফায়েড কপি নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হতে পারবেন।
কয়েকজন প্রার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আপিলের সার্টিফায়েড কপি নেওয়ার জন্য আজ শুক্রবার সকাল ১০টায় প্রার্থীদের আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে আসতে বলে ইসি। প্রার্থীরা সকালে এসে জানতে পারেন বেলা দুইটায় তাঁদের সার্টিফায়েড কপি দেওয়া হবে। সে অনুযায়ী প্রার্থীরা অপেক্ষা করতে থাকেন। পরে ইসির পক্ষ থেকে বলা হয়, রাত আটটায় সার্টিফায়েড কপি দেওয়া হবে। এই ঘোষণার পর প্রার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এ বিষয়ে ইসির যুগ্ম সচিব সেলিম মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা বসে নেই। আগামীকাল (শনিবার) সকাল থেকে সার্টিফায়েড কপি দেওয়া শুরু হবে। বিষয়টি আদালতের মতো। আপনারা জানেন আদালতে একটি সার্টিফায়েড কপি পেতে কত দিন লাগে, এটা অনেকটা সে রকম।’
ইসি আগামীকাল থেকে প্রার্থীদের সার্টিফায়েড কপি দেবে। কিন্তু এই সিদ্ধান্তের কথা প্রার্থীদের জানানো হয়নি। গতকাল ১৬০ জন, আজ ১৫০ জনসহ মোট ৩১০ জনের আপিলের শুনানি করে ইসি। এসব প্রার্থীর কাউকেই সার্টিফায়েড কপি দেওয়া হয়নি। এ কারণে এখন ইসি ভবনের বাইরে ২০ থেকে ২৫ জন প্রার্থী ও তাঁদের লোকজন দাঁড়িয়ে আছেন।
আজ সন্ধ্যায় ইসি ভবনের সামনে দেখা যায়, প্রার্থী ও তাঁদের সমর্থকেরা আপিলের সার্টিফায়েড কপি নেওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন। এ সময় অনেকে সময়ক্ষেপণের জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
গাজীপুর-২ আসনে জাতীয় পার্টির জয়নাল আবেদীন ও কুমিল্লা-৩ আসনে বিএনপির মুজিবুল হক ইসিতে আপিল করে বৈধ হয়েছেন। তাঁরা সার্টিফায়েড কপি নেওয়ার জন্য সারা দিন ধরে ইসিতে অপেক্ষা করছেন। এ ছাড়া বগুড়া-৭ আসনে জাসদের আবদুর রাজ্জাক, নাটোর-৪ আসনে জাসদের ডি এম আলম, লালমনিরহাট-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু হেনা এরশাদ হোসেন, কিশোরগঞ্জ-৩ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ড. মিজানুল হক, নীলফামারী-৪ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মিনহাজুল ইসলাম, বগুড়া-৪ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল ইসলাম আলম ওরফে হিরো আলম—তাঁদের সবার প্রার্থিতা আপিলেও বাতিল হয়েছে। তাঁরা সার্টিফায়েড কপির জন্য বসে আছেন। কারণ, তাঁরা আদালতে যাবেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।