আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সুনামগঞ্জ-৩ (জগন্নাথপুর-দক্ষিণ সুনামগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে মনোনয়নবঞ্চিত হলে দুই জোটের তিন নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার আভাস দিয়েছেন।
এই তিনজন হলেন আওয়ামী লীগের সাবেক সাংসদ প্রয়াত আবদুস সামাদ আজাদের ছেলে আজিজুস সামাদ আজাদ (ডন), জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহীনুর পাশা চৌধুরী ও সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) সৈয়দ আলী আহমদ। আজিজুস সামাদ মহাজোটের বিদ্রোহী প্রার্থী ও অপর দুজন ঐক্যফ্রন্টের বিদ্রোহী প্রার্থী হতে পারেন।
মহাজোট ও ঐক্যফ্রন্টের কয়েকজন নেতা–কর্মী সূত্রে জানা গেছে, এ আসনে মহাজোটের প্রার্থী হতে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন আটজন নেতা। তাঁদের মধ্যে আওয়ামী লীগ থেকে ছয়জন ও জাতীয় পার্টি থেকে দুজন। এই মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে আলোচনার কেন্দ্রে আছেন বর্তমান সাংসদ অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আবদুল মান্নান ও আসনের সাবেক সাংসদ প্রয়াত আবদুস সামাদ আজাদের ছেলে আজিজুস সামাদ আজাদ।
সম্প্রতি মহাজোট প্রার্থী হিসেবে মোহাম্মদ আবদুল মান্নানের নাম গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে একাদশ সংসদ নির্বাচন করার ঘোষণা দেন আজিজুস সামাদ। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে মহাজোটের প্রার্থী আবদুল মান্নানের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন তিনি।
আজিজুস সামাদের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত জগন্নাথপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জয়দ্বীপ সূত্রধর বীরেন্দ্র বলেন, ‘গণমাধ্যমে আজিজুস সামাদের মনোনয়ন না পাওয়ার খবর প্রকাশিত হলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে তাঁকে প্রার্থী হতে জোটের কেন্দ্রীয় নেতারা তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। তাই আজ (গতকাল শনিবার) আমরা কর্মী–সমর্থকদের মতামত নিয়ে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সভা ডেকেছি। তবে আমরা নির্বাচনে আছি, এটা অনেকটা নিশ্চিত।’
এ বিষয়ে জানতে আজিজুস সামাদের মুঠোফোনে কল করা হলেও তিনি তা ধরেননি।
এদিকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন ১১ জন নেতা। তাঁদের মধ্যে আগে থেকেই আলোচনায় ছিলেন শাহীনুর পাশা চৌধুরী ও যুক্তরাজ্য বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কয়ছর এম আহমদ। বর্তমানে এতে যোগ হয়েছেন আজিজুস সামাদ ছাড়াও যুবলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা ও সদ্য গণফোরামে যোগদানকারী নজরুল ইসলাম। ১১ প্রত্যাশীর মধ্যে ঐক্যফ্রন্টের মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত হলে স্বতন্ত্র নির্বাচন করবেন বলে জানিয়েছেন শাহীনুর পাশা চৌধুরী ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) সৈয়দ আলী আহমদ।
শাহীনুর পাশা বলেন, ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কাছে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম যেসব আসন দাবি করবে, তার মধ্যে প্রধান আসনটিই আমার। এরপরও যদি মনোনয়ন না পাই, আমি স্বতন্ত্র নির্বাচন করব।’
আর সৈয়দ আলী আহমদ বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে মাঠে আন্দোলন–সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছি। এখন মনোনয়ন পাবেন অন্য কেউ, তা মেনে নেওয়া যায় না।’