স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা পদে থেকে সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না। শনিবার বিকেলে অনুষ্ঠিত নির্বাচন কমিশনের (ইসি) বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়।
বৈঠক সূত্র জানায়, এ বিষয়ে মাঠ কর্মকর্তাদের লিখিত কোনো নির্দেশ দেওয়া হবে না, মৌখিক নির্দেশ দেওয়া হবে। ইসির মতে, লিখিত নির্দেশ দেওয়া হলে সম্ভাব্য প্রার্থীদের কেউ কেউ আদালতে গিয়ে মামলা করে নির্বাচনকে বিঘ্নিত করতে পারেন। যদিও প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা ও কমিশনার মাহবুব তালুকদার লিখিত নির্দেশ দেওয়ার পক্ষে মত দেন।
জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, আগের নির্বাচনগুলোতে অনেকেই স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের পদে থেকে নির্বাচন করেছেন এবং এ-সংক্রান্ত মামলায় একই বিষয়ে আদালত থেকে দুই ধরনের নির্দেশ পাওয়া গেছে। তবে কমিশন মনে করে, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের জনপ্রতিনিধিদের পদ লাভজনক। আর গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী সরকারের লাভজনক পদে থেকে নির্বাচন করা যাবে না। বিষয়টি মাথায় রেখে কাজ করার জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হবে।
ইসির নির্দেশনা কার্যকর হলে ইউপি, পৌরসভা, উপজেলা, জেলা ও সিটি করপোরেশনের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা পদে থেকে সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না।
২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনে বেশ কয়েকজন পৌর মেয়র ও ঢাকা সিটি করপোরেশনের মেয়র সাদেক হোসেন খোকা ইসির নির্দেশ না মেনে নির্বাচনে প্রার্থী হন। পরে এ-সংক্রান্ত মামলায় রায়ে আদালত সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে থেকে নির্বাচন করা যাবে না বলে রায় দেন।
পৌরসভা আইনে বলা আছে, কোনো মেয়র সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে তিনি মেয়র পদে থাকার যোগ্যতা হারাবেন। আইনের এই ধারাটির ওপর ভিত্তি করে আদালত পৌরসভার মেয়র পদে থেকে সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা যাবে বলে রায় দেন।
কিন্তু ইসি মনে করে, স্থানীয় সরকারের সব প্রতিষ্ঠানের জন্য একটিই আইন প্রযোজ্য থাকা উচিত। সেই হিসেবে ইসি মনে করে, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের পদে থেকে সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা যাবে না।
ইসি বৈঠকে খালেদা জিয়া বিএনপির দলীয় প্রধান কি না, তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। আইনে বলা আছে, প্রার্থীর পোস্টারে দলীয় প্রধান ও প্রার্থীর ছবি এবং প্রতীকের ছবি ব্যবহার করা যাবে।
ইসির বৈঠকে বিতর্ক হয়েছে, দুর্নীতির দায়ে দণ্ডিত খালেদা জিয়া বিএনপির দলীয় কি না, কিংবা দলের প্রার্থীরা পোস্টারে তাঁর ছবি ব্যবহার করতে পারবেন কি না।
বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে ইসি সচিবালয়ের সচিব সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, বিএনপির দলীয় প্রধান কে, সেটা দলের ব্যাপার।
খালেদা জিয়া দলীয় প্রধান কি না, জানতে চাইলে সচিব বলেন, ‘এই প্রশ্ন আইনজ্ঞদের করেন।’