ইসির সঙ্গে সভার পর পুলিশ আরও বেপরোয়া: বিএনপি
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে সভার পর থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। ইসিতে আবার চিঠি দিয়ে বিএনপি বলেছে, মনে হচ্ছে ইসির অধীনে নয়, ইসিই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অধীনে।
শনিবার বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত চিঠিটি নির্বাচন কমিশনে দেওয়া হয়। চিঠিতে মির্জা ফখরুল বলেছেন, মনে হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অধীনেই নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর যেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নির্বাচন কমিশনারের অধীনে, সেখানে কী করে তারা এখনো সারা দেশে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বাড়ি বাড়ি তল্লাশি করে গ্রেপ্তার করছে। তাঁদের এলাকাছাড়া করা হচ্ছে, ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে এবং নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হচ্ছে।
চিঠিতে বলা হয়, ইসির সঙ্গে পুলিশের ওই বৈঠকে বিএনপির নেতা-কর্মীদের হয়রানি ও গ্রেপ্তার থেকে বিরত থাকার জন্য এবং নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করার জন্য দিকনির্দেশনা দেওয়ার পর মুহূর্ত থেকেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। সারা দেশে একের পর এক গ্রেপ্তার ও মিথ্যা মামলা দিয়ে যাচ্ছে। চিঠিতে ওই দিন থেকে গ্রেপ্তার হওয়া ২১ জনের একটি তালিকা যুক্ত করে দেওয়া হয়।
তালিকায় থাকা ব্যক্তিদের মধ্যে আছেন রূপনগর থানা বিএনপির নেতা আবুল কাশেম, ওই থানার যুবদলের সহসভাপতি ফখরুল ইসলাম সিপু, প্রচার সম্পাদক জাহাঙ্গীর বিশ্বাস, যুবদলের নেতা শাহজাহান সিকদার, মিন্টু মিয়া, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা মো. আলাউদ্দিন, মোহাম্মদপুর থানা বিএনপির নেতা আবদুর রহমান ও মাসুম, সূত্রাপুর থানা বিএনপির সহসভাপতি কাউছার আহম্মেদ ও মো. আব্দুস সাত্তার, সূত্রাপুরের স্থানীয় বিএনপি নেতা মজিবর রহমান, শ্রমিক দলের সহসভাপতি দেলোয়ার হোসেন, খিলক্ষেতের ৪৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুল হক ভূঁইয়া, কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলা বিএনপির সদস্য মো. আলমগীর, পৌর বিএনপির সদস্য আ. খালেক, পৌর যুবদলের সদস্য রুবেল মিয়া, শিমুলকান্দি ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ড. জামাল, পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জাকারিয়া ফারুক ও পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মো. কাউছার মিয়া।
এ ছাড়া রমনা থানা ছাত্রদলের নেতা জুয়েল রানাকে গ্রেপ্তারের পর থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়। বলা হয়, কুমিল্লা-৪ আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী এম এ আউয়াল খানকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, যাতে তিনি মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পারেন।
ভৈরবের প্রায় ৬০০ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়েছে, অজ্ঞাতনামা আসামিদের গ্রেপ্তারের নামে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বাড়িতে গিয়ে তল্লাশি ও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বলেন, বিএনপির সব অভিযোগ খতিয়ে দেখতে আগামীকাল রোববার ইসির সভা অনুষ্ঠিত হবে।