রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় বক্তারা বলেছেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে নিবর্তনমূলক বললেও কম বলা হবে, এটা রীতিমতো একটি সন্ত্রাসী আইন। আসলে সরকারের নিজের মধ্যে অপরাধী মন থাকার কারণেই এই আইন করেছে।
গণসংহতি আন্দোলনের উদ্যোগে আজ শনিবার পুরোনো পল্টনের মণি সিংহ-ফরহাদ স্মৃতি ট্রাস্ট ভবনে অনুষ্ঠিত হয় ‘গণবিরোধী ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন: সংবাদমাধ্যম ও নাগরিকদের স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা প্রসঙ্গে’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা।
তেল-গ্যাস-খনিজসম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্যসচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে সরকার যা করতে চাচ্ছে, তা এখনো করেই যাচ্ছে। এখন এটা আইনের কাঠামোর মধ্যে নিয়ে আসা হয়েছে। এতে বোঝা যায় রাষ্ট্র কোন দিকে যাচ্ছে। অবিলম্বে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করতে সরকারকে পরামর্শ দেন তিনি।
সভাপতির বক্তৃতায় গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকী বলেন, সম্ভবত এমন নিবর্তনমূলক আইন কমই আছে।
আলোচনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গণ সংহতি আন্দোলনের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল। এতে তিনি বলেন, সমালোচনার মুখে এই আইনে গুপ্তচরবৃত্তি শব্দটি বাদ দিয়ে মূল কথা অপরিবর্তিত রেখে সেখানে অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ঔপনিবেশিক শাসনের ভূত এখন স্বাধীন বাংলাদেশের শাসকদের মাথায় ভর করেছে। এই ঔপনিবেশিক আইন স্বাধীন দেশে অচল, তা গণতান্ত্রিক রীতনীতির বিরুদ্ধে। আর এই আইনের ৪৩ ধারার মাধ্যমে কার্যত একটি পুলিশি রাষ্ট্রের আইনি বৈধতা দিয়েছে। প্রকৃতপক্ষে এই আইনের ভেতরে এমন ব্যবস্থা রেখে দেওয়া হয়েছে, যা কেবল শাসনব্যবস্থার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির বিরুদ্ধেই নয়, কার্যত দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের পথকেই প্রশস্ত করেছে।
প্রবন্ধে আবুল হাসান বলেন, এই আইন অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার দ্বার রুদ্ধ করছে, মতপ্রকাশের অধিকারকেও ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে।
আলোচনা সভায় আরও বক্তৃতা করেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়কারী সাইফুল হক, আইনজীবী হাসনাত কাইয়ুম প্রমুখ।