মহাসড়কে নিরাপত্তার আশ্বাস পূরণ হয়নি
ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে গত বছর সড়ক দুর্ঘটনায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী নিহত হন। সে সময় পদচারী-সেতু নির্মাণসহ মহাসড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আশ্বাস দিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শিক্ষার্থীরা বলছেন, সেই আশ্বাস পূরণ হয়নি। প্রশাসন বলছে, কাজ চলছে।
গত বছরের ২৬ মে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে দুর্ঘটনায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান ও মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান নিহত হন। তাঁদের মৃত্যুর পর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সভাপতি নজির আমিন চৌধুরী বলেন, বরাবরই এমন হয়ে আসছে। যেকোনো দুর্ঘটনায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুধু আশ্বাস দেওয়া হয়।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সুস্মিতা মরিয়ম বলেন, আশ্বাস প্রদানের পর দায়সারাভাবে কাজ করে প্রশাসন। শিক্ষার্থীরা জানান, সে সময় অবরোধের মুখে বিশ্ববিদ্যালয়ের জয় বাংলা ফটকের সামনে মহাসড়ক পারাপারে পদচারী-সেতু নির্মাণ, সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন, যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণসহ মহাসড়কে সব ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আশ্বাস দেয় প্রশাসন। কিন্তু তা আশ্বাসেই আটকে আছে।
আশ্বাস যদি বাস্তবায়িত না হয়, আবার যদি কোনো দুর্ঘটনা ঘটে; তবে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন প্রতিহত করা কোনোভাবেই সম্ভব হবে না বলে মনে করেন সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক নাসিম আখতার হোসাইন।
উপাচার্য ফারজানা ইসলাম বলেন, জয় বাংলা ফটক-সংলগ্ন রাস্তা পারাপারের জন্য পদচারী-সেতু নির্মাণের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটি ফটকে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ফটকগুলোর সামনে গতিরোধক বসানো হয়েছে।
পদচারী-সেতুর বিষয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মনসুরুল আজিজ বলেন, ইতিমধ্যে সড়কের নির্ধারিত জায়গা পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের শিগগিরই পদচারী-সেতুর নির্মাণকাজের উদ্বোধন করবেন বলে জানিয়েছেন।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, আন্দোলনের এক বছর পর কাজ শুরুর কথা বলা হলেও কতটুকু হবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।তবে ক্যামেরা স্থাপন করেই দায় সারা হয়েছে। পর্যবেক্ষণের জন্য যথাযথ কোনো কর্তৃপক্ষ নেই।
উপাচার্য বলেন, সিসিটিভির দায়িত্বে আছেন অধ্যাপক অজিত কুমার মজুমদার। তবে অজিত কুমার মজুমদার বলেন, ‘ঠিক দায়িত্ব নয়। আমাকে শুধু ক্যামেরা স্থাপনের কথা বলা হয়েছিল। আমি সে কাজটি করেছি। আর প্রশাসনকে বলেছি, সার্বক্ষণিক নজরদারির জন্য পর্যবেক্ষণকক্ষ নির্মাণ করতে। প্রশাসন কেন করছে না, তা আমার জানা নেই।’
মহাসড়কে যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণের জন্য সিঅ্যান্ডবি এলাকায় পুলিশ বক্স বসানোর আশ্বাস দিয়েছিল প্রশাসন। এ ব্যাপারে সাভার সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. খোরশেদ আলম বলেন, ‘ওই এলাকায় পুলিশ বক্স বসানোর ব্যাপারে আমাদের কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি।’