আট লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ, সড়ক থেকে সরলেন শ্রমিকেরা
সাভারে তৈরি পোশাকশ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় চার ঘণ্টা অবরোধ ছিল ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক। পরে ওই শ্রমিকের পরিবারকে আট লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ায় পরিস্থিতি শান্ত হয়। এর আগে ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবিতে শনিবার বিকেল চারটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত ওই সড়ক অবরোধ করেন শ্রমিকেরা।
মারা যাওয়া শ্রমিকের নাম রাশেদুল ইসলাম (২৮)। তিনি সাভারের উলাইলে অবস্থিত এইচআর টেক্সটাইলে সুইং বিভাগে কর্মরত ছিলেন। অভিযোগ উঠেছে, অসুস্থ ওই শ্রমিক ছুটি চাওয়া সত্ত্বেও কারখানা কর্তৃপক্ষ তাঁকে কাজ করতে বাধ্য করেন। পরে কাজ করা অবস্থাতেই শনিবার বিকেলে তাঁর মৃত্যু হয়।
মহাসড়ক অবরোধ করা শ্রমিকদের কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শনিবার বেলা দেড়টার দিকে অসুস্থ হয়ে পড়েন রাশেদুল ইসলাম। এরপর তিনি কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে ছুটি চান। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ তাঁকে ছুটি না দিয়ে কাজ করতে বলেন। এরপর বেলা তিনটার দিকে কাজ করা অবস্থায় রাশেদুল কারখানার মেঝেতে লুটিয়ে পড়েন। এ সময় অন্য শ্রমিকেরা কারখানার অভ্যন্তরে থাকা ক্লিনিকে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
শ্রমিকেরা বলেন, রাশেদুলের মৃত্যুর পর তাঁর পরিবারের জন্য কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করেন তাঁরা। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করে, নিয়ম অনুযায়ী রাশেদুলের পাওনা টাকা এক সপ্তাহের মধ্যে দেওয়ার কথা বলে। এতে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন শ্রমিকেরা। তাঁরা সড়ক অবরোধের পাশাপাশি কারখানার ফটক ও বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করতে দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিকেল চারটা থেকে কারখানাটির হাজার হাজার শ্রমিক সড়ক অবরোধে অংশ নেন। তাঁরা রাশেদুলের লাশ অ্যাম্বুলেন্সে সড়কে রেখেই এই অবস্থান নেন। কারখানাটিতে প্রায় ১২ হাজার শ্রমিক কর্মরত রয়েছেন বলে জানা যায়। অবরোধ চলাকালে মহাসড়কের উভয় পাশে প্রায় ১২ কিলোমিটার যান চলাচল বন্ধ থাকে। পরে রাত আটটার দিকে কারখানা কর্তৃপক্ষ রাশেদুলের পরিবারকে আট লাখ টাকা দিলে শ্রমিকেরা তাঁদের অবরোধ তুলে নেন। তবে এ ব্যাপারে তাৎক্ষণিক কারখানা কর্তৃপক্ষের কারও সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।