'কর্মী সংকটে যুক্তরাজ্যের রেস্তোরাঁ ব্যবসা'
যুক্তরাজ্যের কমিউনিটি নেতা ও ক্যাটারার্স ব্যবসায়ী সৈয়দ আবুল মনসুর লিলু সম্প্রতি এসেছিলেন প্রথম আলো উত্তর আমেরিকা কার্যালয়ে। যুক্তরাজ্যপ্রবাসী বাংলাদেশিদের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলে আশির দশকে বাংলাদেশের প্রগতিশীল আন্দোলনের অন্যতম এ সংগঠক। আলাপচারিতায় যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের বিভিন্ন অর্জনের কথা উঠে আসে। বাংলাদেশ ক্যাটারার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএ), ইউকের এ নির্বাহী সদস্য জানালেন যুক্তরাজ্যে রেস্তোরাঁ ব্যবসার হালচালের কথা।
প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার সঙ্গে আলাপে সৈয়দ আবুল মনসুর লিলু বলেন, প্রবাসে বাংলাদেশের লোকজন অনেক এগিয়ে গেছে। দেশছাড়া প্রবাসীরা তাঁদের উৎসের সঙ্গে বন্ধনকে অক্ষুণ্ন রেখেই এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত রেখেছেন। নতুন প্রজন্মের কাছেও পূর্বসূরিদের চেতনা সদা ভাস্বর। নানা সমস্যা ও সাংস্কৃতিক টানাপোড়েন সত্ত্বেও প্রবাসে বাংলাদেশিদের অগ্রযাত্রা আশাপ্রদ। যুক্তরাজ্যে প্রবাসী বাংলাদেশিরা এরই মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সামাজিক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অনেকটা এগিয়ে আছেন। বাংলাদেশিরা লন্ডনে যে ‘কারি’ শিল্প (রেস্তোরাঁ ব্যবসা) গড়ে তুলেছেন, তা আজ যুক্তরাজ্যের অর্থনীতির এক শক্তিশালী অনুষঙ্গ। যুক্তরাজ্যের মূলধারায় বিসিএ একটি শক্তিশালী বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান।
তবে দীর্ঘদিন ধরে বহু যত্নে গড়ে তোলা এ ‘কারি’ শিল্প এখন নানা কারণে হুমকির মুখে রয়েছে বলে জানান আবুল মনসুর। তিনি বলেন, যুক্তরাজ্যে কারি শিল্প এখন হুমকির সম্মুখীন। লোকসংকটের কারণে এ সংকট দেখা দিয়েছে। যুক্তরাজ্যের বহু রেস্তোরাঁ এখন বন্ধের উপক্রম। কঠিন অভিবাসী আইনই এ সংকটের জন্য দায়ী।
আবুল মনসুরের সঙ্গে আলোচনায় উঠে এসেছে বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের রাজনীতি সংস্কৃতি গতিপ্রকৃতির বিষয়টিও। তিনি বলেন, ‘আমরা কঠিন সময় পার করছি। বাঙালি জাতীয়তার যে ভিত্তি, তা ব্যাহত হয়েছে। সামরিক হস্তক্ষেপই শুধু নয় অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ব্যাহত করা হয়েছে। এর ছাপ আমাদের সামাজিক-সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলকে প্রভাবিত করেছে। এ অপচেষ্টা শুধু দেশে নয়, প্রবাসেও লক্ষ্য করা গেছে। বাঙালি সংস্কৃতির বিকাশ ও চর্চায় নানাভাবে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করা হয়। সুখের কথা হচ্ছে বাংলাদেশের দেশপ্রেমিক জনগণ এ প্রচেষ্টাকে দমন করেছে। বাঙালি সংস্কৃতির বিকাশ ও লালনে প্রবাসে মূলধারার লোকজন যে প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন, তা আশাপ্রদ।
প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি বাংলাদেশ সরকারের দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে আবুল মনসুর বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকারকে মনে রাখতে হবে যে, বাংলাদেশের বাইরে আরেক বাংলাদেশ এখন। সারা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা বাংলাদেশিরা এখন দেশের সম্পদ। দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় তাদের অংশগ্রহণের সুযোগ করে দিতে নানা কর্মসূচি নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।’