২ জন করোনায় আক্রান্ত, দেশজুড়ে লকডাউন

সম্প্রতি অগ্ন্যুৎপাতের পর সৃষ্ট সুনামির আঘাতে বিপর্যস্ত হয় টোঙ্গা
ছবি: রয়টার্স ফাইল ছবি

টোঙ্গার রাজধানী নুকুয়ালোফায় নতুন করে দুজনের করোনা শনাক্ত হওয়ায় লকডাউন ঘোষণা করেছে দেশটির সরকার। আজ বুধবার সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে এ লকডাউন কার্যকর হবে। বিবিসির এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

টোঙ্গার প্রধানমন্ত্রী সিয়াওসি সোভালেনি জানান, সাম্প্রতিক অগ্ন্যুৎপাত ও সুনামির পর থেকে বিদেশি ত্রাণ আসছে—এমন একটি বন্দরে আক্রান্ত ওই দুই ব্যক্তি শনাক্ত হয়েছেন।

গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দেওয়া এক ভাষণে সোভালেনি বলেন, আজ সন্ধ্যা ছয়টা থেকে লকডাউনে যাবে টোঙ্গা। পাশাপাশি প্রতি ৪৮ ঘণ্টা পরপর পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হবে।

সোভালেনি আরও বলেন, এ মুহূর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সংক্রমণ হার কমানো এবং যাঁরা আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের সুস্থ করা।

লকডাউন চলার সময় এক দ্বীপ থেকে অন্য দ্বীপে কোনো নৌকা চলাচল করতে দেওয়া হবে না এবং অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটও চলাচল করবে না বলে জানান সোভালেনি।

দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশটি এত দিন অনেকটাই ভাইরাসমুক্ত দেশ হিসেবে বিবেচিত হতো। গত অক্টোবরে সেখানে শুধু একজনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল।

সম্প্রতি সমুদ্রের তলদেশে অগ্ন্যুৎপাতের পর সৃষ্ট সুনামিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে টোঙ্গা। এমন অবস্থায় দেশটি প্রচণ্ডভাবে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের নেতৃত্বাধীন বিদেশি সহায়তার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। বিশেষ করে এসব দেশ থেকে বিশুদ্ধ পানি, আশ্রয়কেন্দ্রে ব্যবহৃত উপকরণ এবং উদ্ধারকাজে ব্যবহৃত সরঞ্জাম পাঠানো হয়। উপকূলে ত্রাণ নিয়ে নোঙর করা জাহাজ থেকে যেন করোনাভাইরাস ছড়িয়ে না পড়ে, তা নিশ্চিত করতে সম্প্রতি কঠোর বিধি আরোপ করে টোঙ্গা সরকার। ‘স্পর্শহীন’ ওই বিধির আওতায় টোঙ্গা কর্তৃপক্ষ ত্রাণসামগ্রীগুলো সঙ্গে সঙ্গে স্পর্শ করে না। এগুলোকে তিন দিন আইসোলেশনে রাখা হয়।

গত সপ্তাহে টোঙ্গাগামী অস্ট্রেলিয়ার একটি ত্রাণবাহী জাহাজে করোনার প্রকোপ ছড়িয়ে পড়ে। জাহাজের ৬০০ ক্রুর মধ্যে ২৩ জন করোনায় আক্রান্ত হন। করোনা শনাক্ত হওয়ার পরও জাহাজটি টোঙ্গার বন্দরে নোঙর করেছিল।

টোঙ্গার যে দুই নাগরিক সম্প্রতি আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁরা ওই জাহাজে কাজ করতেন কি না, তা উল্লেখ করেননি সোভালেনি।

১ লাখ ৬ হাজার জনসংখ্যা অধ্যুষিত দেশ টোঙ্গায় কমপক্ষে ৬০ শতাংশ মানুষ দুই ডোজ করোনা টিকা নিয়েছেন। তবে দেশটির দুর্গম কিছু এলাকায় স্বাস্থ্য সুরক্ষার ব্যবস্থা সীমিত থাকায় সেখানকার বাসিন্দারা করোনার প্রকোপে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন।