যার হাতে বারবার গ্রেপ্তার, তাঁকেই কিডনি দিলেন তিনি

কিডনিদাতা জোসলিনের সঙ্গে টেরেল পটার
ছবি: জোসলিনের ইনস্টাগ্রাম

যে পুলিশ কর্মকর্তার হাতে বারবার গ্রেপ্তার হতে হয়েছিল, তাকেই নিজের কিডনি দান! হ্যাঁ, এমনটাই ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রের আলবামা অঙ্গরাজ্যে।


ফক্স নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, কিডনি দানকারী একজন নারী। ওই অঙ্গরাজ্যের মোস্ট ওয়ান্টেড অপরাধীর তালিকায় তাঁর নাম ছিল। মাদকাসক্তির কারণে তিনি হেন কাজ নেই যা করেননি। জোসলিন জেমস (৪০) নামের ওই নারী শুধু ২০০৭ থেকে ২০১২ —এই পাঁচ বছরে ১৬ বার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন।

এর মধ্যে পুলিশ কর্মকর্তা টেরেল পটারের হাতে গ্রেপ্তার হন কয়েকবার। এই টেরেলকেই নিজের একটি কিডনি দিয়েছেন জোসলিন।

জোসলিন জেমস টানা নয় মাস মাদক নিরাময় কেন্দ্রে থাকার পর এখন সুস্থ। বর্তমানে তিনি মাদকাসক্ত নারীদের উন্নয়নে কাজ করছেন। সর্বশেষ তিনি ছয় মাস কারাভোগ করেন। কারাভোগ শেষে তাঁকে নিরাময় কেন্দ্রে নেওয়া হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা টেরেল পটার অনেক দিন ধরে কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন। সাত থেকে আট বছর ধরে তিনি একটি কিডনি প্রতিস্থাপনের চেষ্টা চালিয়ে আসছেন। কিন্তু উপযুক্ত দাতা পাচ্ছিলেন না। টেরেলের মেয়ে এসব কথা লিখে ফেসবুকে পোস্ট করেন। আর এই পোস্ট চোখে পড়ে জোসলিনের । এর পর তিনি ছুটে যান টেরেলের কাছে।

দাতা ও গ্রহীতা উভয়ের কিডনি ম্যাচিং হওয়ায় গত জুলাইয়ে সফলভাবে টেরেলের কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়। জোসলিন ও টেরেল দুজনই সুস্থ রয়েছেন।

কিডনি দেওয়াতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। একজন মানুষকে কিডনির মতো অঙ্গ দেওয়ার সৌভাগ্য চাইলেও পাওয়া যায় না। আমি সম্পূর্ণ সুস্থ। এখনো সপ্তাহে অনায়াসে ৭৮ ঘণ্টা কাজ করতে পারছি।
জোসলিন জেমস, কিডনি দাতা
‘এটা অবিশ্বাস্য। আমার জন্য যদি ১০০ জন সম্ভাব্য কিডনি দানকারীর তালিকা করতে বলেন, সেখানে কোনোভাবেই জোসলিন জেমসের নাম আসত না। এটা কি সম্ভব, যে ব্যক্তি কারাগারে পুরল সে ব্যক্তিকেই নিজের কিডনি দান!’
টেরেল পটার, অবসরে যাওয়া পুলিশ কর্মকর্তা

জোসলিনের ব্যাপারে ফক্স নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, মাদকাসক্তির কারণে তাঁকে চাকরি হারাতে হয়েছে। এর অর্থ জোগান দিতে তিনি নিজের গাড়ি খোয়ান, এমনকি এমন কোনো হেন কাজ ছিল না যে তিনি করেননি। একপর্যায়ে অঙ্গরাজ্যের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাঁকে মোস্ট ওয়ান্টেড অপরাধীর তালিকাভুক্ত করে।

সর্বশেষ গ্রেপ্তারের বিষয়ে জোসলিন বলেন, ‘এক দিন টিভিতে দেখি মোস্ট ওয়ান্টেড তালিকায় আমার নাম। পুলিশ আমাকে খুঁজছে। তখন আমার শরীরের অবস্থা খুবই খারাপ। পরদিন রোগা-দুর্বল শরীর নিয়ে নিজেই পুলিশের কাছে ধরা দিই। এর পর ছয় মাস কারাভোগ ও রিহ্যাবে যাওয়া’।