মিয়ানমারে গুলিতে এবার স্বাস্থ্যকর্মী নিহত
চলমান সেনাশাসনবিরোধী বিক্ষোভে মিয়ানমারের স্বাস্থ্য খাতের কর্মীরা আগেই রাজপথে নেমেছেন। আজ বৃহস্পতিবার তাঁদের ওপর জান্তার খড়্গ নেমে এসেছে।
মান্দালয় শহরে সেনাদের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন বিক্ষোভরত অন্তত এক স্বাস্থ্যকর্মী।
বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মান্দালয়ের রাজপথে আজ বিক্ষোভ মিছিল করছিলেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। তাঁদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে হঠাৎই গুলি চালায় সেনারা। প্রাণ বাঁচাতে অনেকেই পাশের একটি মসজিদের প্রাঙ্গণে আশ্রয় নেন।
এ ঘটনায় ৩০ বছর বয়সী একজন স্বাস্থ্যকর্মী নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে এএফপি।
আহত হয়েছে আরও অন্তত দুজন। হতাহতদের চিকিৎসা দেওয়া একজন চিকিৎসক বলেন, নিহত হওয়া ওই ব্যক্তি পালাতে গিয়ে পেছন থেকে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাঁর বুক ভেদ করে গুলি বেরিয়ে গেছে। তবে তাঁর পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।
এ সময় ছয়জন চিকিৎসক ও নার্সকে আটক করে নিয়ে গেছে সেনারা, জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
১ ফেব্রুয়ারির রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারজুড়ে তুমুল আন্দোলন চলছে। চলমান আন্দোলনে শুরু থেকেই সক্রিয় রয়েছেন দেশটির স্বাস্থ্য খাতের কর্মীরা। মিয়ানমারের গণমাধ্যমের খবর, বিক্ষোভে অংশ নেওয়ায় অন্তত ২০ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে শান্তি ও শৃঙ্খলাভঙ্গের আনুষ্ঠানিক অভিযোগ এনেছে জান্তা সরকার।
দুই মাসের বেশি সময় ধরে চলা বিক্ষোভে মিয়ানমারে শিশুসহ ৭০০ জনের বেশি মানুষ গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানিয়েছে অধিকার সংগঠন অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স (এএপিপি)। আটক হয়েছেন সাংবাদিক, শিল্পীসহ তিন সহস্রাধিক বিক্ষোভকারী।
এএফপি বলছে, বিক্ষোভ চালিয়ে যেতে চলতি সপ্তাহে মিয়ানমারে পালিত হচ্ছে না নববর্ষের উৎসব। রাজপথে নেচে-গেয়ে, পানি ছিটানোর উৎসব করে প্রতিবার নববর্ষ উদযাপন করেন মিয়ানমারবাসী। তবে জান্তার রক্তক্ষয়ী দমন-পীড়ন এবারের উৎসব আয়োজনে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাতিল করা হয়েছে পানি ছিটানোর আয়োজন।
ইয়াঙ্গুনের একজন বাসিন্দা বলেন, ‘জান্তার গুলিতে প্রতিদিনই রাজপথে মানুষ মরছে।
এ পরিস্থিতিতে সবাই ভীষণ মর্মাহত। তবে এটা মনে করি না যে এ লড়াইয়ে আমরা হারব। তাই আমরা বাড়িতেই নববর্ষ পালন করছি।’
এদিকে মিয়ানমারে মোটরসাইকেল র্যালি থেকে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভের অন্যতম নেতা ওয়াই মো নাইংকে (২৫) গ্রেপ্তার করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। আজ ইয়াঙ্গুন থেকে প্রায় ৭০০ কিলোমিটার উত্তরে আন্দোলনের অন্যতম কেন্দ্র ময়েওয়া শহরে আটক হন নাইং। প্রত্যক্ষদর্শী ও বিক্ষোভকারীদের বরাতে রয়টার্স জানিয়েছে, মোটরসাইকেল র্যালির নেতৃত্ব দেওয়ার সময় নাইংকে একটি গাড়ি ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। এর পরপরই আটক করা হয় তাঁকে।