মার্কিন কংগ্রেস ভবনে হামলার চেষ্টা, নিহত ২

হামলার পর ক্যাপিটল পুলিশের ভারপ্রাপ্ত প্রধান ইয়োগান্ডা ডি. পিটম্যান বলেন, হামলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আহত দুই সদস্যের মধ্যে একজন নিহত হয়েছেন। আর মেট্রোপলিটন পুলিশ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত প্রধান রবার্ট কনটে বলেছেন, এখন পর্যন্ত এই হামলাকে সন্ত্রাসবাদের ঘটনা বলে মনে হচ্ছে না।

মার্কিন কংগ্রেস ভবনে হামলার চেষ্টার পর ক্যাপিটল হিল এলাকায় পুলিশ ও ন্যাশনাল গার্ডের সদস্যদের অবস্থানছবি: এএফপি

যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস ভবন ক্যাপিটলে হামলার চেষ্টা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এক সদস্য নিহত ও আরেকজন আহত হয়েছেন। পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন সন্দেহভাজন হামলাকারী। স্থানীয় সময় শুক্রবার এ ঘটনা ঘটে। এর পরপরই ক্যাপিটল ভবন লকডাউন করা হয়।
ক্যাপিটল ভবনে গত ৬ জানুয়ারি তৎকালীন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকদের হামলার পর শুক্রবার এ ঘটনা ঘটল।

নীল রঙের গাড়িটিতে ছিলেন সন্দেহভাজন হামলাকারী।
ছবি: এএফপি


মার্কিন কংগ্রেসের একজন জ্যেষ্ঠ সহকারী ও ক্যাপিটল পুলিশ সূত্রের বরাত দিয়ে সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তি গাড়ি নিয়ে ক্যাপিটল ভবনের দিকে যাওয়া কনস্টিটিউশন অ্যাভিনিউয়ে নিরাপত্তা প্রতিবন্ধক ভাঙার চেষ্টা করেন। এরপর তিনি ছুরি নিয়ে হামলার চেষ্টা করেন। পুলিশ জবাবে সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তিকে গুলি করে। এতে হামলাকারী নিহত হন। এর আগেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দুই সদস্য ছুরিকাঘাতের শিকার হন।


ক্যাপিটল পুলিশের ভারপ্রাপ্ত প্রধান ইয়োগান্ডা ডি. পিটম্যান বলেন, হামলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আহত দুই সদস্যের মধ্যে একজন নিহত হয়েছেন।
মেট্রোপলিটন পুলিশ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত প্রধান রবার্ট কনটে বলেছেন, এখন পর্যন্ত এই হামলাকে সন্ত্রাসবাদের ঘটনা বলে মনে হচ্ছে না।

হামলার পর মার্কিন ন্যাশনাল গার্ডের সদস্যরা ক্যাপিটল ভবনের আশপাশে অবস্থান নেন
ছবি: রয়টার্স


তবে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, ঘটনার পরপরই ক্যাপিটল পুলিশ এক টুইটে বলেছে, সন্দেহভাজন একজনকে আটক করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আহত দুই সদস্যকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। আটক ব্যক্তিকেও হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, ঘটনার সময় গুলির আওয়াজ পাওয়া গেছে।


সিএনএন জানায়, ঘটনার পরপরই ক্যাপিটল ভবন এলাকায় আবারও ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করা হয়েছে। এর আগে ৬ জানুয়ারির হামলার পরও সেখানে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করা হয়েছিল। গতকালের ঘটনা সম্পর্কে প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, হামলার চেষ্টার পরপরই ক্যাপিটল ভবন লকডাউন করা হয়।
টেলিভিশন ফুটেজে দেখা যায়, ক্যাপিটল ভবনের দিকে যাওয়া একটি সড়কে নিরাপত্তা প্রতিবন্ধক ভাঙার চেষ্টা করে নীল রঙের একটি গাড়ি। এই ঘটনায় আটক ব্যক্তির নাম-পরিচয় অথবা তাঁর উদ্দেশ্য সম্পর্কে তাৎক্ষণিক কিছু জানা যায়নি।

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল ভবন এলাকায় হামলার চেষ্টার পর ওই এলাকা লকডাউন করা হয়
ছবি: এএফপি


মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, ক্যাপিটল ভবন লকডাউনের পাশাপাশি ক্যাপিটল পুলিশ বিভাগের সদস্যদের সতর্ক থাকতে বলা হয়। ঘটনার পরপরই ওই এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যাপক উপস্থিতি দেখা গেছে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। তবে গতকালের ঘটনাটি এমন সময় ঘটেছে, যখন কংগ্রেসের কোনো অধিবেশন চলছে না। বেশির ভাগ আইনপ্রণেতা ওই সময় ক্যাপিটল ভবন এলাকায় ছিলেনও না। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ঘটনার আগেই ক্যাম্প ডেভিডের উদ্দেশে ওয়াশিংটন ছেড়ে গেছেন।

ক্যাপিটল ভবনের কাছে নিরাপত্তা প্রতিবন্ধক ভাঙার চেষ্টা করা নীল রঙের গাড়ি ঘিরে রেখেছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। ২ এপ্রিল ওয়াশিংটনের ক্যাপিটল হিল এলাকায়।
ছবি: রয়টার্স


যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের তথ্যমতে, জানুয়ারির ওই হামলার ঘটনায় ৩০০ জনের বেশি মানুষের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আসামিদের মধ্যে কট্টর ডানপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠী প্রাউড বয়েজ এবং ওথ কিপার্সের সদস্যরাও রয়েছেন। এ ছাড়া আরও ১০০ জনকে হামলার ঘটনায় আসামি করার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।


এ ছাড়া হামলায় উসকানি দেওয়ার অভিযোগে সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে দ্বিতীয়বারের মতো অভিশংসিত হয়েছেন। তবে প্রথম অভিশংসন বিচারের মতো এই দফায়ও ট্রাম্প কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে উতরে গেছেন।