মঙ্গল গ্রহ নয়, পৃথিবী টানে বিল গেটসকে
অন্যান্য প্রযুক্তি উদ্যোক্তার মতো মহাকাশ ভ্রমণ বা মঙ্গল গ্রহ টানে না বিল গেটসকে। এর চেয়ে তাঁর মন টানে পৃথিবীর মানুষের নানা সমস্যা। পৃথিবীর মানুষের নানা সমস্যা সমাধানে তাঁর আগ্রহ বেশি। সে কথাটি আবার নতুন করে জানালেন মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা।
বিল গেটস বলেছেন, তিনি ইলন মাস্কের মতো ‘মঙ্গল ব্যক্তিত্ব’ নন। মঙ্গল গ্রহ ভ্রমণের পেছনে অর্থ খরচের পরিবর্তে তিনি পৃথিবীর মানুষের জন্য টিকার পেছনে অর্থ খরচে বেশি আগ্রহী।
ইন্ডিয়া টুডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত সোমবার মার্কিন সাংবাদিক কারা সুইসহারের ‘এসওয়ে’ পডকাস্টে অংশ নিয়ে নিজের আগ্রহের কথা তুলে ধরেন বিল গেটস।
ইলন মাস্ক প্রযুক্তি উদ্যোক্তা হিসেবে পরিচিত। গাড়ি নির্মাতা টেসলা ও মহাকাশযান নির্মাতাপ্রতিষ্ঠান স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী তিনি।
ব্যবসা ও প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট বিজনেস ইনসাইডারের তথ্য অনুযায়ী, প্রযুক্তি জগতে টেসলার ইলন মাস্ক ও আমাজনের জেফ বেজোস ব্যক্তিগত মহাকাশ ভ্রমণ প্রকল্পে কোটি কোটি ডলার খরচ করেছেন। তাঁদের লক্ষ্য পৃথিবীর বাইরে মানব বসতি স্থাপন করা। কিন্তু বিল গেটস পৃথিবীর বাইরে বসতি স্থাপনের চেয়ে পৃথিবীতে বিরাজমান সমস্যা সমাধানে তাঁর আগ্রহের কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি মঙ্গল ব্যক্তিত্ব নই। অনেক মঙ্গল ব্যক্তিত্বকে চিনি। তবে রকেটকে সমাধান হিসেবে দেখি না।’ বিল গেটস তাঁর লেখা ‘হাউ টু অ্যাভোয়েড আ ক্লাইমেট ডিজাস্টার’ শীর্ষক বইয়ের প্রচারে ওই পডকাস্টে অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে বিল গেটস আরও বলেন, মানুষের বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরাসরি অবদান রাখার ক্ষেত্রগুলোতে তিনি খরচ করতে বেশি আগ্রহী। এমনকি তিনি মহাকাশ ভ্রমণে যেতে কোনো টিকিট কিনতেও আগ্রহী নন। বিল গেটস তাঁর লক্ষ্য নিয়ে বলেন, ‘আমি অনেক বেশি অর্থ ভ্রমণে খরচ করতে চাই না। এর পরিবর্তে আমার দাতব্য সংস্থা হামের টিকা কিনতে পারে। এতে মাত্র এক হাজার ডলার খরচ করে একজন মানুষের জীবন বাঁচানো সম্ভব। আমি যখনই কোনো কিছু করি, ভাবি, এর বদলে এক হাজার ডলার খরচ করে আমি হামের টিকা কিনতে পারব।’
এদিকে দীর্ঘ মেয়াদে জলবায়ু পরিবর্তন ও কার্বন নির্গমন ঠেকানোর বিষয়ে মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বলেন, ‘যেসব শিল্পে সবুজ বিপ্লব আনা কঠিন, সেসব ক্ষেত্রে মানুষকে বেশি মনোযোগ দিতে হবে।’
বিল গেটসের লক্ষ্যের চেয়ে স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহীর লক্ষ্য ভিন্ন। তিনি মঙ্গল গ্রহে বসতি স্থাপন করতে চান। স্পেসএক্সের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, আগামী বছরেই মঙ্গল গ্রহে রকেট পাঠানোর পরিকল্পনা করছেন মাস্ক। ২০২৪ সালে আরএ কার্গো ও নভোচারী পাঠাবেন তিনি। ২০৫০ সালের মধ্যে ১০ লাখ মানুষকে মঙ্গলে পাঠানোর লক্ষ্য তাঁর।
বিল গেটসের মতে, টেসলার মতো প্রতিষ্ঠান মানুষের সহজ কাজের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করছে। অন্য শিল্প খাতকে জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বড় সমস্যা সমাধানে পার্থক্য তৈরি করতে হবে।