ভেনেজুয়েলার শরণার্থী ঠেকাতে সীমান্তে কড়াকড়ি ইকুয়েডরের
ভেনেজুয়েলার শরণার্থী ঠেকাতে সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপ করেছে ইকুয়েডর। ইকুয়েডরে ঢুকতে এখন থেকে ভেনেজুয়েলার নাগরিকদের পরিচয়পত্রের পরিবর্তে পাসপোর্ট দেখাতে হবে।
অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকটে থাকায় ভেনেজুয়েলার হাজার হাজার নাগরিক প্রতিদিন সীমান্ত অতিক্রম করে কলম্বিয়া চলে যাচ্ছেন। সেখান থেকে কেবল পরিচয়পত্র নিয়ে ইকুয়েডর সীমান্ত অতিক্রম করেন তাঁরা। এবার এই পথ বন্ধ করতে ভেনেজুয়েলার নাগরিকদের পাসপোর্ট দেখাতে হবে—এমন নির্দেশ জারি করেছে ইকুয়েডর। অনেকে সেখান থেকে পেরু ও চিলিতে থাকা পরিবারের কাছে চলে যাচ্ছেন।
বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ভেনেজুয়েলার এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করেছে কলম্বিয়া। দেশটি বলছে, এর ফলে অসহায় মানুষেরা সীমান্তে এসে আটকা পড়ে থাকবেন।
বেশ কয়েক বছর ধরে উচ্চ মূল্যস্ফীতি, খাদ্য ও ওষুধ-সংকটের মুখে পড়েছে তেলসমৃদ্ধ দেশ ভেনেজুয়েলা। যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনপুষ্ট অন্তর্ঘাতের কারণে এই বিপর্যয়ের বলে মনে করছেন দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা প্রেসিডেন্টে নিকোলা মাদুরো। তবে দেশটির বিরোধীদলীয় নেতাদের দাবি, ১৯৯৯ সাল থেকে দেশটির ক্ষমতায় থাকা সোশ্যালিস্ট পার্টির ভুল নীতির কারণেই এই বিপর্যয়। অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের কারণে সীমান্ত অতিক্রম করে নাগরিকেরা পার্শ্ববর্তী দেশগুলোয় কাজ ও খাবারের সন্ধানে পাড়ি জমাচ্ছেন।
গত ১৫ মাসে প্রায় ১০ লাখ অভিবাসী কলম্বিয়ায় প্রবেশ করেছেন। সরকারি তথ্যমতে, সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিন গড়ে সাড়ে চার হাজার ভেনেজুয়েলার মানুষ ইকুয়েডরে যাচ্ছেন। বহু ঘাত-প্রতিঘাত সয়ে কয়েক সপ্তাহ ধরে যাত্রার পর সীমান্ত এলাকায় পৌঁছান তাঁরা। গতকাল শনিবার পাসপোর্ট না থাকায় প্রায় ৩০০ জন ভেনেজুয়েলার নাগরিককে আটকে দেয় ইকুয়েডর।
ইকুয়েডরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, এ বছর প্রায় ছয় লাখ মানুষ ভেনেজুয়েলা থেকে তাঁর দেশে ঢুকেছেন। এঁদের মধ্যে এক লাখ মানুষ ইকুয়েডরেই থেকে গেছেন। অভিবাসীদের চাপে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা করছে দেশটি।
এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপের সিদ্ধান্ত নেয় কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট হুয়ান ম্যানুয়েল সান্তোস। ওই খবরের পর ভেনেজুয়েলার হাজার হাজার নাগরিক সীমান্তে ভিড় জমায়।
এরপর চলতি মাসে শরণার্থীদের ঠেকাতে সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে ব্রাজিল। ভেনেজুয়েলার সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করার ওই নির্দেশ দেন ব্রাজিলের একজন বিচারক। হেলডের বারেতো নামের ওই বিচারক বলেন, ‘যত দিন পর্যন্ত আমাদের দেশ বাড়তি মানুষের চাপ সামলানোর জন্য উপযুক্ত না হচ্ছে, তত দিন পর্যন্ত ভেনেজুয়েলার সঙ্গে সীমান্ত চালু হবে না।’