ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে হত্যা পরিকল্পনার অভিযোগে বাংলাদেশি আটক
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে-কে হত্যার পরিকল্পনার অভিযোগে নাইমুর জাকারিয়া রহমান নামের বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ। ২০ বছর বয়সী জাকারিয়াকে আজ বুধবার ওয়েস্টমিনস্টার ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে তোলা হয়। আদালতে নিজেকে ‘বাংলাদেশি-ব্রিটিশ’ বলে পরিচয় দেন তিনি।
জাকারিয়া আত্মঘাতী বোমা ফাটিয়ে এবং ছুরি হামলা চালিয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিলেন বলে অভিযোগ। জাকারিয়ার বিরুদ্ধে মোহাম্মদ আকিব ইমরান নামের অন্য এক যুবককে সন্ত্রাসী কর্মে সহযোগিতারও অভিযোগ আনা হয়েছে।
জাকারিয়ার পাশাপাশি বুধবার ২১ বছর বয়সী মোহাম্মদ আকিব ইমরানকেও ওয়েস্টমিনস্টার ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে হাজির করে পুলিশ। ইমরান নিজেকে ‘পাকিস্তানি-ব্রিটিশ’ বলে পরিচয় দেন। তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদে জড়ানোর অভিযোগ আনা হয়েছে। আদালত দুজনকে রিমান্ডের অনুমোদন দিয়েছে। ২০ ডিসেম্বর তাঁদের লন্ডনের ওল্ড বেইলি আদালতে হাজির করার কথা রয়েছে।
আদালতে পুলিশ দাবি করে, তাঁরা প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে-কে হত্যার সক্রিয় পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দিতে সক্ষম হয়েছে।
গত ২৮ নভেম্বর নাইমুল জাকারিয়া রহমানকে লন্ডন থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাঁর কাছ থেকে একধরনের বিস্ফোরক (আইডিএস) উদ্ধার করা হয় বলে দাবি পুলিশের। জাকারিয়া দক্ষিণ লন্ডনের বাসিন্দা। জাকারিয়াকে আটকের ৯০ মিনিটের মাথায় লন্ডন থেকে প্রায় দেড় শ মাইল দূরের বার্মিংহাম শহর থেকে মোহাম্মদ আকিব ইমরানকে গ্রেপ্তার করা হয়।
যুক্তরাজ্যে একের পর এক সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার একটি তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়, গত এক বছরে গোয়েন্দারা মোট নয়টি সন্ত্রাসী হামলার সক্রিয় পরিকল্পনা ভন্ডুল করে দিতে সক্ষম হয়েছে। তবে প্রতিবেদনে ম্যানচেস্টারে আত্মঘাতী হামলাকারী সালমান আবেদির বিষয়ে গোয়েন্দাদের ত্রুটি নির্দেশ করে বলা হয়, ওই হামলা ঠেকানো যেত। এসব নিয়ে আলোচনার মধ্যেই প্রধানমন্ত্রীকে হত্যা পরিকল্পনার দায়ে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত জাকারিয়াকে আদালতে তোলা হলো।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও বাসভবন ১০ ডাউনিং স্ট্রিট স্টিলের বেষ্টনী দিয়ে ঘেরা। আর প্রবেশপথে লোহার গেট। গেটে নিরাপত্তায় নিয়োজিত সদস্যদের সশস্ত্র পাহারা।
আদালতে অভিযোগ উত্থাপন করে বলা হয়, নাইমুর জাকারিয়া রহমান আত্মঘাতী বেল্ট পরিধান করে বোমা ফাটিয়ে এই গেট দিয়ে প্রবেশের পরিকল্পনা করেছিলেন। এরপর পেপার স্প্রে এবং ছুরি হামলা চালিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে প্রবেশের পরিকল্পনা নিয়েছিলেন। এ ছাড়া তিনি মোহাম্মদ আকিব ইমরানকে সন্ত্রাসবাদে জড়াতে সাহায্য করছিলেন। ইমরান জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসে যোগ দিতে একাধিকবার লিবিয়ায় পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন বলে অভিযোগ। এ জন্য তিনি উগ্রবাদী তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ, প্রয়োজনীয় অর্থের জোগান, যাতায়াত পরিকল্পনাসহ ভুয়া পাসপোর্ট বানানোর পথে বেশ কয়েক ধাপ এগিয়ে গিয়েছিলেন বলে অভিযোগ।
প্রসিকিউটর মার্ক ক্যারল বলেন, এখানে দুটি গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে, যা সন্ত্রাসবাদের পরিকল্পনা, প্রস্তুতি এবং হামলা চালানোর ছক নির্ধারণের সঙ্গে যুক্ত। চূড়ান্ত পর্যায়ে যাওয়ার আগেই এসব ধামিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়েছে।
অভিযুক্ত দুজন আইনজীবীর মাধ্যমে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছেন।