প্লাজমা থেরাপি করোনায় মৃত্যুঝুঁকি কমাতে পারে না: গবেষণা

প্রতীকী ছবি

করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) গুরুতর অসুস্থ হওয়ার বা মৃত্যুর ঝুঁকি কমাতে পারে না প্লাজমা থেরাপি। নতুন এক গবেষণায় এই তথ্য মিলেছে। বার্তা সংস্থা এএফপির এক খবরে বৃহস্পতিবার এ কথা জানানো হয়।
প্লাজমা নেওয়া হয় করোনামুক্ত হওয়া ব্যক্তির রক্ত থেকে। ওই ব্যক্তির দেহে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়, যা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে। রোগমুক্ত ব্যক্তির প্লাজমা অসুস্থ ব্যক্তির দেহে প্রয়োগ করা হলে গ্রহীতার দেহেও সেই অ্যান্টিবডি ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে বলে ধারণা করা হয়। করোনাভাইরাসে সংক্রমিত রোগীদের চিকিৎসায়ও কয়েকটি দেশে এই প্লাজমা থেরাপির ব্যবহার চলছে। যদিও এ ক্ষেত্রে থেরাপির কার্যকারিতা এখন পর্যন্ত পুরোপুরি নিশ্চিত নয়।
ভারত, যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দেশে এই কনভালসেন্ট প্লাজমা ব্যবহারের জরুরি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এটা আসলেই কাজ করে কি না, তা খতিয়ে দেখতে কয়েকটি ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল (পরীক্ষামূলক প্রয়োগ) চলছে। তার একটি ভারতজুড়ে পরিচালিত নতুন এই গবেষণা। ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে চিকিৎসাবিষয়ক ‘ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নাল’ (বিএমজে) সাময়িকীতে।

গবেষণা নিবন্ধে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে এই কনভালসেন্ট প্লাজমা ‘সামান্যই কার্যকর’ বলে দেখা গেছে। অবশ্য গবেষকেরা বলেছেন, ভবিষ্যৎ গবেষণায় শুধু সেই প্লাজমা ব্যবহার করে দেখা যেতে পারে, যাতে উচ্চমাত্রার নিষ্ক্রিয় অ্যান্টিবডি রয়েছে। করোনা রুখতে এমন প্লাজমা অধিকতর কার্যকর কি না, খতিয়ে দেখতে হবে।
এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় কার্যকর ওষুধ নেই বললেই চলে। করোনা প্রতিরোধের জন্য কার্যকর টিকাও হাতে আসেনি। ফলে দেহে এই ভাইরাসের আক্রমণের তীব্রতা কমিয়ে দেওয়ার উপায় খুঁজছে বিভিন্ন দেশ। এরই অংশ প্লাজমা থেরাপির ব্যবহার।
এর আগে ১৮৯২ সালে ডিপথেরিয়া রোগের বিরুদ্ধে প্রথমবারের মতো প্লাজমা থেরাপির ব্যবহার হয়েছিল। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে ইবোলা ও সার্স ভাইরাসে সংক্রমিত ব্যক্তিদের দ্রুত রোগমুক্তির ক্ষেত্রে প্লাজমা থেরাপি কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে। ওই ভাইরাসেরই পরিবারভুক্ত কোভিড-১৯–এর জন্য দায়ী করোনাভাইরাস।
সম্প্রতি করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় কিছু পর্যবেক্ষণমূলক গবেষণা চালানো হয়। সেগুলো থেকে গবেষকেরা আন্দাজ করেছিলেন, এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্লাজমা থেরাপি উপকার বয়ে আনতে পারে। কিন্তু নতুন এই গবেষণা পরিচালিত হয়েছে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল পদ্ধতিতে। ভারতজুড়ে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল থেকে দৈবচয়নের ভিত্তিতে রোগী নির্বাচন করা হয়। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্চের অর্থায়নে এই গবেষণায় অংশ নেওয়া মোট ৪৬৪ রোগীর গড় বয়স ৫২ বছর। গবেষকেরা দেখতে পেয়েছেন, মৃত্যুর হার কমাতে সক্ষম নয় কনভালসেন্ট প্লাজমা।