নওয়াজ শরিফের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা

নওয়াজ শরিফ
ফাইল ছবি

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা হয়েছে। মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে পাকিস্তান রাষ্ট্র ও রাষ্ট্রীয় কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ‘ষড়যন্ত্র’ করার অভিযোগ আনা হয়েছে। পাকিস্তানের গণমাধ্যম ডনের খবরে এ কথা বলা হয়।

নওয়াজ শরিফ পাকিস্তান মুসলিম লীগের (পিএমএল-এন) সর্বোচ্চ নেতা। তাঁর বিরুদ্ধে লাহোরের শাহধারা থানায় আজ মামলাটি করেন বদর রাশিদ নামের এক ব্যক্তি। তিনি পাকিস্তান ইলেকট্রনিক ক্রাইমস অ্যাক্ট ও দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারা উল্লেখ করেছেন। এসব ধারার অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে সাইবার সন্ত্রাস, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, পাকিস্তান রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর উসকানির ষড়যন্ত্র, পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্মের নিন্দা জানানো ও দেশের সার্বভৌমত্ব বিলুপ্ত করা, রাষ্ট্রদ্রোহ করা এবং বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে শত্রুতা বাধিয়ে দেওয়া।

মামলায় নওয়াজ শরিফের পাশাপাশি পিএমএল-এন নেতা মারিয়াম নওয়াজ, রানা সানাউল্লাহ, আহসান ইকবালসহ আরও কয়েকজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এই নেতারা গত সপ্তাহে দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি ও কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে অংশ নিয়েছিলেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, নওয়াজ শরিফের বিরুদ্ধে অনেকগুলো দুর্নীতির মামলা বিভিন্ন আদালতে চলমান। তিনি যুক্তরাজ্যের লন্ডনে গেছেন চিকিৎসা নেওয়ার কথা বলে। কিন্তু সেখানে তিনি তা না করে পরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন ধরনের জ্বালাময়ী বক্তৃতা দিয়ে রাষ্ট্র ও এর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মর্যাদাহানি করে চলেছেন।

এজাহারে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ তুলে বলা হয়, সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী গত ২০ সেপ্টেম্বর ও ১ অক্টোবর দুটি বৈঠকে বক্তৃতা দিয়েছেন। সেখানে এমন কথা বলেছেন, যা প্রতিবেশী ভারতের নীতিকে সমর্থন করে। পাকিস্তানের নাম যাতে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদে অর্থ জোগানদাতাদের ওপর নজরদারিতে যুক্ত সংস্থা ফিন্যান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্সের (এফএটিএফ) ধূসর তালিকায় থেকে যায়, সে জন্যই এই বক্তব্য।

এজাহারে অভিযোগ করা হয়, নওয়াজ শরিফের বক্তব্যের আসল উদ্দেশ্য পাকিস্তানকে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে একঘরে করে ফেলা। দেশটিকে দুর্বৃত্ত রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করা। নওয়াজ দেশের জনগণকে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। তাঁর বক্তব্যের আরেক লক্ষ্য ভারতশাসিত কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগগুলোর ওপর থেকে সবার মনোযোগ ভিন্ন দিকে ঘোরানো। এর মাধ্যমে নওয়াজ তাঁর ‘বন্ধু’ ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে সুবিধা দিতে চান।

এই মামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে নওয়াজ শরিফের পাকিস্তান মুসলিম লীগ (পিএমএল-এন)। দলটির নেতা জাফর ইকবাল এক বিবৃতিতে বলেন, রাজনীতিকদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করার মাধ্যমে সরকারের অযোগ্যতা ঢেকে রাখা যাবে না। বেকারত্ব, মূল্যস্ফীতি ও দারিদ্র্যের মতো সমস্যা মোকাবিলার উপায় না খুঁজে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সরকার বিরোধীদের দমাতে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করছে।