কেন্দ্রে বরিস জনসন
যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির নেতা ও প্রধানমন্ত্রী হওয়ার নির্বাচনে আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু করেছেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন। বুধবার লন্ডনে প্রচারণার উদ্বোধনী বক্তব্যেই তিনি এই নির্বাচনের মূল আকর্ষণে পরিণত হন।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মের উত্তরসূরি নির্বাচনে বলিষ্ঠ প্রার্থী হিসেবে বরিস জনসন শুরু থেকেই নানা কারণে আলোচিত। দলের তৃণমূলে তাঁর জনপ্রিয়তা তুমুল। আবার ব্রেক্সিটসহ বিভিন্ন ইস্যুতে তাঁর বক্তব্য ঝড় তুলেছে। অন্য প্রার্থীরা যেখানে বেশ আগে থেকেই গণমাধ্যম দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন, সেখানে জনসন ছিলেন অনেকটা পলাতক।
অবশেষে দলের প্রভাবশালীদের নিয়ে প্রচার অনুষ্ঠানে এসে জনসন বললেন, দুই দফা এই বিচ্ছেদ পিছিয়েছে। আগামী ৩১ অক্টোবর নির্ধারিত দিনে ব্রেক্সিট কার্যকর না হলে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির জন্য ভয়াবহ পরিণতি অপেক্ষা করছে।
কট্টর ব্রেক্সিটপন্থী জনসন বলেন, ব্রেক্সিটের সময় আর পেছানোর অর্থ হবে লেবার নেতা জেরেমি করবিনকে ক্ষমতায় আনা। করবিনকে কট্টর বামপন্থী আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ক্ষমতার ধারেরকাছেও করবিনকে ঘেঁষতে দেওয়া যাবে না। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থানসহ বিভিন্ন বিষয়ে নিজের অবস্থান তুলে ধরেন জনসন। কেবল ব্রেক্সিট বাস্তবায়ন নয়, আগামী সাধারণ নির্বাচনে দলকে ক্ষমতায় আনার জন্যও নিজেকে যোগ্য প্রার্থী বলে দাবি করেন।
দুই দফা লন্ডনের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করা জনসন বলেন, লন্ডনকে বিশ্বের অন্যতম শহর হিসেবে দাঁড় করাতে তিনি যা করেছেন, সুযোগ পেলে তিনি পুরো দেশের জন্য তা–ই করতে পারবেন।
অতীতের নানা কাণ্ডের জন্য অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের কঠিন সব প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছে জনসনকে। মুসলিম নারীদের ‘লেটার বক্স’–এর সঙ্গে তুলনা করার বিষয়টিও জানতে চাওয়া হয় তাঁর কাছে। জবাবে জনসন বলেন, রাজনীতিকেরা যা ভাবেন সেটি স্পষ্ট ভাষায় প্রকাশ করবেন, এমনটিই মানুষ দেখতে চায়। ভবিষ্যতেও তিনি নিজের ভাবনাগুলো একইভাবে প্রকাশ করবেন বলে জানান। গতকাল প্রকাশিত এক খবরে বলা হয়েছে, প্রার্থী হিসেবে জনপ্রিয়তায় সবচেয়ে এগিয়ে আছেন জনসন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদও গতকাল আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু করেছেন। তিনি বলেন, থেরেসা মের বিতর্কিত অভিবাসনব্যবস্থার অবসান ঘটাবেন তিনি।
এই নেতা নির্বাচনে মোট প্রার্থী ১০ জন। অন্য প্রার্থীরা আগেই প্রচার শুরু করেছেন। ডোমিনিক রাব, অ্যান্ড্রিয়া লিডসম ও অ্যাস্টার ম্যাকভি চুক্তি ছাড়াই ব্রেক্সিটের পক্ষে। রোরি স্টুয়ার্ট ও ম্যাট হ্যানকন চুক্তি ছাড়া বিচ্ছেদ ঠেকাতে কাজ করবেন। আর মাইকেল গোভ ও জেরেমি হান্ট প্রয়োজনে বিচ্ছেদের সময় আরও পেছাতে রাজি।
তবে চুক্তিবিহীন বিচ্ছেদ টেকাতে উঠেপড়ে লেগেছে বিরোধী দল লেবার পার্টি। এ জন্য গতকাল পার্লামেন্টে একটি সর্বদলীয় প্রস্তাব উত্থাপন করেছে দলটি।