কাজের ফাঁকে ঘুমবাড়িতে
লন্ডনের শোরডিচে এক নতুন প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। নাম পপ অ্যান্ড রেস্ট। উদ্যোক্তা দুই তরুণ—মাউরিসিও ভিয়ামিজা ও ইওয়ান দেমোঁ। এ প্রতিষ্ঠানের কাজ হলো, লোককে ভাড়ায় বিশ্রামের ব্যবস্থা করে দেওয়া।
উদ্যোক্তা ভিয়ামিজা জানান, জাপানি ক্যাপসুল হোটেলগুলোর ভাবনা তাঁদের পপ অ্যান্ড রেস্ট গড়ে তোলার পেছনে অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে। লন্ডনের কর্মব্যস্ত শহরে ক্লান্ত মানুষগুলোর না আছে খাওয়ার, না আছে ঘুমানোর সঠিক কোনো সময়সূচি। অফিসের চাপে কমবেশি পিষ্ট সবার জীবন।
লন্ডনের নাগরিক হাঁসফাঁসের এই পরিস্থিতি বিবেচনা করে ভিয়ামিজা ও দেমোঁর মাথায় আসে, কর্মব্যস্ত কর্মীদের কফির থেকেও বিশ্রামটাই বেশি প্রয়োজন। একেবারে শান্ত-নিস্তব্ধ, নরম একটা বিছানা। ল্যাভেন্ডার সুরভি ছড়ানো অন্ধকার সব কক্ষ গড়ে তোলা হয়েছে পপ অ্যান্ড রেস্টে। শব্দ কানে না আসার জন্য সরবরাহ করা হয় ইয়ার-প্লাগ। চোখে একদমই যেন আলো না পড়ে, তার জন্য মাস্ক। ঘণ্টাপ্রতি মাত্র ১৫ পাউন্ডেই (২০ ডলার) এখানে মিলবে বিশ্রামের সুযোগ। কর্মক্লান্ত চাকরিজীবীর জন্য আর কী চাই! চাপ আর ক্লান্তিতে নরক হয়ে ওঠা জীবনে ঘণ্টাখানেক চোখটা বুজতে পারা যেন স্বর্গের সুখের মতোই। আর এটুকু বিশ্রামেই চনমনে ভাবটা চলে আসে কর্মীর শরীরে। এরপর অফিসের বাকি কর্মঘণ্টাগুলো অনায়াসেই পার করে দেওয়া যায়।
ভিয়ামিজা জানালেন, সপ্তাহে ৩০-৩৫ জন গ্রাহক আসেন তাঁদের এখানে। আর তাঁদের বেশির ভাগই ফ্রিল্যান্সার ও বড় প্রতিষ্ঠানের চুক্তিভিত্তিক কর্মী। এ ধরনের কর্মীদের কাজের কোনো সময়সূচি থাকে না। গ্রায়েম ড্যানিয়েল (৫৮) একজন ফ্যাশন কোম্পানির পরিচালক। গত জুনে চালু হওয়ার পর বেশ কয়েকবার তিনি পপ অ্যান্ড রেস্টে এসেছেন। তিনি জানালেন, এখানকার স্লিপিং পডগুলো বেশ কাজের। লেট নাইটের পর এটা ভীষণ কাজে দেয়।
ড্যান অ্যান্ড্রু (৩০) নামের এক ডিজাইনার জানালেন, তিনি পপ অ্যান্ড রেস্টের কাছেই কাজ করেন। এখানে চারবার এসেছেন। এখানে এসে খানিকক্ষণ ধ্যান (মেডিটেশন) করেন।