ওয়াশিংটন-লন্ডনের মিত্রতার সম্পর্কে টানাপোড়েন
যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূত কিম ডারোচের ফাঁস হওয়া গোপন নথির তথ্যে বেজায় চটেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রাষ্ট্রদূতের পাশাপাশি যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মেকে সমালোচনা করে গত সোমবার একাধিক টুইট করেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তিনি সরাসরি বলেও দিয়েছেন, ওই রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আর কাজ করবেন না। তবে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ডাউনিং স্ট্রিট বলেছে, ট্রাম্পকে নয়, ডারোচের প্রতিই পূর্ণ সমর্থন রয়েছেন তাদের। বিষয়টি নিয়ে মিত্র দুই দেশের মধ্যে টানাপোড়েন দেখা দিয়েছে।
গত মাসে যুক্তরাজ্যের সরকারকে পাঠানো এক গোপন বার্তায় ডারোচ ট্রাম্প ও তাঁর প্রশাসনকে ‘অদক্ষ’ ও ‘পুরোপুরি অকার্যকর’ হিসেবে বর্ণনা করেন। গত রোববার ওই গোপন বার্তা ফাঁস হয়। ওই ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর ট্রাম্প বলেছেন, বিষয়টি নিয়ে তিনি মাথা ঘামাচ্ছেন না। তবে সোমবার সেই জায়গা থেকে সরে এসে ট্রাম্প টুইট করেন, ‘আমি রাষ্ট্রদূতকে চিনি না। যুক্তরাষ্ট্রে তাঁর পরিচিত ও সুনামও নেই। আমরা তাঁর সঙ্গে আর কাজ করব না। যুক্তরাজ্যের জন্য ভালো সংবাদ যে তারা একটি নতুন ভালো প্রধানমন্ত্রী পেতে যাচ্ছে শিগগিরই।’
ট্রাম্প ব্রিটেনের বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মেকেও সমালোচনা করেন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদের (ব্রেক্সিট) বিষয়ে মের পদক্ষেপ ব্যর্থ হয়েছে দাবি করে মার্কিন প্রেসেডেন্ট বলেন, মে তাঁর উপদেশ অবজ্ঞা করেছেন।
থেরেসা মের মুখপাত্র বলেছেন, ডারোচের মতামতের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সরকার ও মন্ত্রীদের ধারণার মিল নেই। রাষ্ট্রদূতদের তাঁদের খোলাখুলি মূল্যায়ন প্রদানে আস্থা থাকা জরুরি। তাই ওই কূটনীতিকের প্রতি সমর্থন রয়েছে লন্ডনের। ওই মুখপাত্র আরও বলেন, ‘আমরা ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে অপ্রত্যাশিত গোপন নথি ফাঁসের ঘটনাটি জানিয়েছি। আমরা তাদের জানিয়েছি, ফাঁসের ঘটনা অগ্রহণযোগ্য।’
চলতি মাসের শেষের দিকে ডাউনিং স্ট্রিট ছেড়ে যাওয়া মের স্থলাভিষিক্ত হতে লড়ছেন ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন এবং বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্ট। ওয়াশিংটন ও লন্ডনের দীর্ঘদিনের মিত্রতার সম্পর্কে হঠাৎ টানাপোড়েনের কথা স্বীকার করে সাবেক মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী অ্যাস্টন কার্টার বলেন, ‘এখন কেউ ভালো অবস্থায় নেই। এই অবস্থার চেয়ে নিজেদের সম্পর্কের স্বীকৃতি দেওয়া উচিত আমাদের।’