এবার ইউরোপের তিন দেশ থেকে রুশ কূটনীতিক বহিষ্কার
এবার রাশিয়ার তিন কূটনীতিককে বহিষ্কার করল ইউরোপের তিন দেশ। রাশিয়া থেকে জার্মানি, সুইডেন ও পোল্যান্ডের কূটনীতিকদের বহিষ্কারের চারদিনের মাথায় এই তিন দেশ পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে রুশ কূটনীতকদের বহিষ্কার করল।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়, জার্মানি, সুইডেন ও পোল্যান্ডের পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে সোমবার রুশ কূটনীতিকদের বহিষ্কারের কথা জানানো হয়। তিন দেশই গত সপ্তাহে তাঁদের কূটনীতিককে মস্কো থেকে বহিষ্কারের বিষয়টিকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে উল্লেখ করে।
এ ঘটনার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেন, ইউরোপের তিন দেশ থেকে রুশ কূটনীতিকদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত ‘অন্যায্য’ । তিনি বলেন, ‘পশ্চিমা দেশগুলো আমাদের দেশের বিরুদ্ধে যে ব্যবস্থাগুলো নিচ্ছে, এটা তার ধারাবাহিকতামাত্র। যেটাকে আমরা রাশিয়ায় অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বাইরের হস্তক্ষেপ বলে বিবেচনা করছি।’
রাশিয়ার বিরোধী নেতা ও প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কট্টর সমালোচক অ্যালেক্সি নাভালনির পক্ষে ‘অবৈধ বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার’ অভিযোগে জার্মানি, সুইডেন ও পোল্যান্ডের কূটনীতিকদের বহিষ্কার করে রাশিয়া। এ বিষয়টিকে মস্কো তার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বাইরের হস্তক্ষেপ বলে বিবেচনা করে।
গত শুক্রবার মস্কোতে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গে লাভরভের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি–বিষয়ক প্রধান জোসেফ বোরেল বৈঠক করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ওই কূটনীতিকদের বহিষ্কারের ঘোষণা আসে।
গত ১৭ জানুয়ারি জার্মানির বার্লিন থেকে রাশিয়ার মস্কোয় ফেরেন নাভালনি। তাঁকে বিমানবন্দরেই গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁকে ৩০ দিনের আটকাদেশ দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। সেই থেকে তিনি কারাগারেই আছেন।
গত বছরের আগস্টে রাশিয়ায় বিষ প্রয়োগের শিকার হয়ে নাভালনি জার্মানির বার্লিনে গিয়ে চিকিৎসা নিয়ে দেশে ফেরেন।
৩ ফেব্রুয়ারি নাভালনিকে সাড়ে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন মস্কোর একটি আদালত। ২০১৪ সালের জালিয়াতির একটি মামলায় স্থগিত সাজার শর্ত লঙ্ঘনের দায়ে নাভালনিকে এ কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
নাভালনির সাজার রায় ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক বিক্ষোভের ডাক দেন তাঁর সমর্থকেরা। তাঁর সমর্থনে রাশিয়াজুড়ে হাজারো মানুষ বিক্ষোভ করেন। মস্কোয় চলা বিক্ষোভে সহিংসতাও হয়েছে।
নাভালনির সাজার রায়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে তীব্র প্রতিক্রিয়া এসেছে। ইউরোপের শীর্ষ মানবাধিকার সংস্থা কাউন্সিল অব ইউরোপ বলেছে, এই রায় সব বিশ্বাসযোগ্যতার বাইরে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নাভালনির মুক্তি দাবি করেন।