এপস্টেইনের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির নতুন অভিযোগে হতভম্ব প্রিন্স অ্যান্ড্রু
ব্রিটিশ রাজপরিবারের সদস্য প্রিন্স অ্যান্ড্রু তাঁর সাবেক বন্ধু জেফরি এপস্টেইনের বিরুদ্ধে নতুন করে আনা যৌন হয়রানির অভিযোগে হতবাক হয়ে পড়েছেন। সম্প্রতি প্রকাশিত ২০১০ সালের এক ভিডিও ফুটেজে যৌন নিপীড়নের দায়ে অভিযুক্ত এপস্টেইনের ম্যানহাটানের বাড়িতে দুজনকে একসঙ্গে দেখা যায়। ভিডিও ফুটেজটি প্রকাশ হওয়ার পর এক বিবৃতিতে নিজের মতামত জানান যুক্তরাজ্যের প্রিন্স অ্যান্ড্রু। খবর এএফপি ও বিবিসির।
শিশু-কিশোরীদের পাচার ও জোর করে যৌনদাসীর কাজ করানোর মতো গুরুতর অভিযোগে কারাবাসে থাকা অবস্থায় আত্মহত্যা করেন মার্কিন ধনকুবের জেফরি এপস্টেইন। মেইল অনলাইনের প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজটিতে ২০১০ সালের ৬ ডিসেম্বরের একটি দৃশ্য ধারণ করা হয়েছিল। নিউইয়র্কের সেন্ট্রাল পার্কের পাশে এপস্টেইনের বাড়ির সদর দরজা থেকে বেরিয়ে আসতে দেখা যায় মার্কিন এই ধনকুবেরকে, তাঁর পাশেই ছিলেন প্রিন্স অ্যান্ড্রু। এক নারী দরজায় দাঁড়িয়ে হাত নেড়ে তাঁদের বিদায় জানাচ্ছিলেন।
কিশোরী পাচার ও যৌনকর্মে অংশ নিতে বাধ্য করার অভিযোগে কারাগারে ছিলেন ৬৬ বছর বয়সী এপস্টেইন। তাঁর বিরুদ্ধে নতুন কিছু অভিযোগের আইনি নথিপত্র প্রকাশ্যে আসার এক দিন পর ১০ আগস্ট রহস্যজনকভাবে মারা যান তিনি। যে কারণে তাঁর মৃত্যুকে ঘিরে বেশ কিছু ষড়যন্ত্রতত্ত্বও সামনে এসেছে।
বাকিংহাম প্যালেসের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জেফরি এপস্টেইনের বিরুদ্ধে নতুন করে যৌন হয়রানির অভিযোগ প্রকাশিত হওয়ার পর হতবাক হয়ে পড়েছেন ডিউক অব ইয়র্ক। ব্রিটিশ রাজসিংহাসনের উত্তরাধিকারীদের তালিকায় পঞ্চম স্থানে রয়েছেন প্রিন্স অ্যান্ড্রু। তিনি রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের দ্বিতীয় ছেলে।
এর আগে যুক্তরাজ্যের প্রিন্স অ্যান্ড্রুর বিরুদ্ধে এক নাবালিকাকে ‘যৌনদাসী’ করে রাখার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালতে মামলা হয়। অভিযোগে বলা হয়, ওই নারীর নাবালিকা বয়সে তাঁকে লন্ডন, নিউইয়র্ক ও ক্যারিবীয় এলাকায় কয়েকবার প্রিন্স অ্যান্ড্রুর সঙ্গে যৌন সংসর্গে বাধ্য করা হয়েছিল। ১৯৯৯ থেকে ২০০২ সালের মধ্যে এসব ঘটনা ঘটে। ক্যারিবীয় এলাকায় অ্যান্ড্রুর বন্ধু জেফরি এপস্টেইনের মালিকানাধীন একটি দ্বীপে মেয়েটিকে রাখা হয়েছিল। লন্ডনের বাকিংহাম প্যালেস এক বিবৃতিতে ওই অভিযোগ অস্বীকার করে।
নিউইয়র্কে জন্ম নেওয়া এপস্টেইনের বিরুদ্ধে ২০০২ থেকে ২০০৫ সালের মধ্যে ১৮ বছরের কম বয়সী মেয়েদের জোর করে যৌনকর্মে অংশ নেওয়ার অভিযোগ আনা হয়। ২০০৮ সালের ৬ জুলাই নিউ জার্সিতে বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করা হয় তাঁকে। বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তির সঙ্গে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ঘনিষ্ঠ সময় কাটাতে দেখা গেছে তাঁকে। বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন ও যুক্তরাজ্যের প্রিন্স অ্যান্ড্রুর সঙ্গে অনেকবারই দেখা গেছে এপস্টেইনকে। ২০০২ সালে নিউইয়র্কের এক সাময়িকীতে এপস্টেইনকে ‘চমৎকার মানুষ’ হিসেবে অভিহিত দিয়েছিলেন ট্রাম্প। এপস্টেইনকে ১৫ বছর ধরে চিনতেন বলেও তখন মন্তব্য করেছিলেন ট্রাম্প।