আরও বড় আকারে ফাইজারের টিকা পরীক্ষা
তৃতীয় ধাপের টিকা পরীক্ষা আরও বড় আকারে করার জন্য প্রস্তাব দিয়েছে মার্কিন ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ফাইজার ও জার্মান জৈবপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান বায়োএনটেক।
গতকাল শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসনের (এফডিএ) কাছে জমা দেওয়া প্রস্তাবে ৪৪ হাজার স্বেচ্ছাসেবীর ওপর টিকা প্রয়োগের কথা বলেছে প্রতিষ্ঠান দুটি।
আগে তারা টিকার কার্যকারিতা পরীক্ষার জন্য চূড়ান্ত ধাপের পরীক্ষাটি ৩০ হাজার মানুষের ওপর করতে চেয়েছিল।
ফাইজার ও বায়োএনটেকের যৌথভাবে কাজ করা টিকাটি নিয়ে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তাদের টিকার পরীক্ষা পরিকল্পনামাফিক এগিয়ে যাচ্ছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যেই তাদের ৩০ হাজার স্বেচ্ছাসেবী টিকা পরীক্ষায় অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে। এবারে তারা আগের লক্ষ্যের চেয়ে আরও ১৪ হাজার মানুষের ওপর টিকা পরীক্ষা করবে।
প্রতিষ্ঠান দুটির বিবৃতিতে আরও বলা হচ্ছে, তাদের প্রস্তাবিত বিস্তৃত টিকা পরীক্ষার ফলে আরও বেশি ধরনের মানুষের ওপর টিকা পরীক্ষা করা যাবে। এতে ১৬ বছর বয়সের কম কিশোর-কিশোরী, বিভিন্ন ধরনের রোগীদের ওপর টিকা প্রয়োগে বাড়তি নিরাপত্তা ও কার্যকারিতার তথ্য পাওয়া যাবে।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বরাবরই টিকা পরীক্ষার ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের মানুষকে অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলে আসছেন। এর মধ্যে বয়স্ক, বিভিন্ন বর্ণ ও বিভিন্ন শারীরিক সমস্যাযুক্ত মানুষের ওপর প্রয়োগের বিষয়টি রয়েছে। এতে সব ধরনের মানুষের ওপর টিকার কার্যকারিতার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে।
এর আগে কোভিড-১৯–এর টিকা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান মডার্নার পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা টিকা পরীক্ষার ক্ষেত্রে কিছুটা ধীরগতিতে এগোচ্ছে। কারণ সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকা লোকজনকে পরীক্ষার আওতায় আনতে কাজ করছেন তাঁরা।
ফাইজারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আলবার্ট বোরলা এ মাসের শুরুতেই বলেছিলেন, অক্টোবরের শেষ দিকে তাঁর প্রতিষ্ঠান টিকা পরীক্ষার ফল পেয়ে যেতে পারে।
গতকাল শনিবার প্রতিষ্ঠানটি অক্টোবরের শেষ দিকে টিকার কার্যকারিতা–সম্পর্কিত পর্যাপ্ত তথ্য পাওয়ার কথা বলেছে। তবে টিকাটি যথেষ্ট নিরাপদ কি না, তা জানতে ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া–সম্পর্কিত তথ্য জানতে আরও বেশি সময় লাগতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে যে ছয়টি কোম্পানিতে অর্থায়ন করে দ্রুত টিকা তৈরির কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে ফাইজারের নাম রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ছয়টি প্রতিষ্ঠানের পেছনে ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে। ফাইজার ও বায়োএনটেকের পেছনে ২০০ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে দেশটি।
গত জুলাই মাসে টিকার প্রাথমিক পর্যায়ের ফল ঘোষণা করে ফাইজার। ওই সময় টাইম অনলাইনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বোরলা বলেছিলেন, তাঁরা আশা করছেন, আগামী অক্টোবর মাস নাগাদ তাঁদের ভ্যাকসিনের জন্য ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের কাছ থেকে অনুমোদন পেয়ে যাবেন। সেপ্টেম্বরেই তাঁরা টিকার কার্যকারিতার ফল জেনে যাবেন।
গত ১ জুলাই ফাইজার তাদের টিকার ইতিবাচক ফল জানিয়ে দাবি করে, এটি স্বাস্থ্যবান মানুষের মধ্যে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। তবে এটি বেশি মাত্রায় দেওয়া হলে জ্বরসহ অন্যান্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
ফাইজারের তৈরি ভ্যাকসিনের প্রথম ক্লিনিক্যাল তথ্য ‘মেডআরএক্সআইভি’ সাময়িকীতে প্রকাশ করা হয়। ইতিবাচক ফল প্রকাশ হওয়ার পর থেকে বার্ষিক ভ্যাকসিন ডোজ তৈরির লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে ১০ কোটি করেছে।