অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী হতে যাওয়া কে এই আলবানিজ
অস্ট্রেলিয়ায় স্থানীয় সময় গতকাল শনিবার অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনের ভোট গণনা এখনো চলছে। ১৫১ আসনবিশিষ্ট পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভের জন্য দলগুলোকে অন্তত ৭২টি আসনে জয় পেতে হবে। এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত ফলাফলে এগিয়ে আছে অ্যান্থনি আলবানিজের দল লেবার পার্টি। ইতিমধ্যে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন পরাজয় মেনে নিয়েছেন। আলবানিজকে অভিনন্দনও জানিয়েছেন বিদায়ী এ প্রধানমন্ত্রী। খবর আল-জাজিরার।
অস্ট্রেলিয়াকে নেতৃত্ব দিতে যাওয়া অ্যান্থনি আলবানিজ একলা মায়ের একমাত্র সন্তান। সিডনিতে শ্রমজীবী মানুষদের বসবাসের একটি এলাকায় বড় হয়েছেন তিনি। আলবানিজের ডাক নাম ‘আলবো’। ২৬ বছর আগে অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্টে প্রথমবারের মতো নির্বাচিত হন আলবানিজ। এই ২৬ বছরে লেবাররা মাত্র পাঁচ বছর ক্ষমতায় ছিল। ২০০৭ সালের নির্বাচনে লেবার পার্টির কেভিন রাড বিজয় লাভ করার পর তাঁর প্রশাসনের মন্ত্রী হন আলবানিজ। মন্ত্রী হিসেবে এটিই তাঁর প্রথম দায়িত্ব। ২০১৯ সালে লেবারদের পরাজয়ের পর দলটির নেতৃত্ব নেন তিনি।
৫৯ বছর বয়সী লেবার নেতা সিডনিতে তাঁর সমর্থকদের উদ্দেশে দেওয়া বক্তব্যে নিজেকে বিজয়ী দাবি করেছেন। তিনি বলেন, ‘অস্ট্রেলীয় জনগণ পরিবর্তনের জন্য ভোট দিয়েছেন। এ জয়ে আমি অভিভূত।’
আলবানিজ মনে করেন, রক্ষণশীল প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন সরকারের অধীন বিভাজনের রাজনীতি চলেছে। তিনি বলেন, ‘আমি দেশকে ঐক্যবদ্ধ করতে চাই। আমি মনে করি, জনগণের মধ্যে অনেক বিভাজন তৈরি হয়েছে। তারা জাতি হিসেবে একত্র হতে চায়। আর এ ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিতে চাই আমি।’
আলবানিজ বলেন, ১২১ বছরের মধ্যে তিনিই একমাত্র প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী, যিনি অ্যাংলো সেলটিক গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত নন। সিডনির উপকণ্ঠে অবস্থিত ক্যাম্পারডাউন এলাকায় নিজের বেড়ে ওঠার স্মৃতিও উল্লেখ করেন আলবানিজ। তিনি বলেন, ‘আমার মা আমার জন্য উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখতেন। আশা করছি, আমার জীবনের এই ইতিহাস অস্ট্রেলীয় নাগরিকদের উচ্চ শিখরে পৌঁছাতে অনুপ্রেরণা দেবে।’
‘আমি চাই, অস্ট্রেলিয়া এমন একটি দেশ হবে, যেন যেখানেই আপনারা বেড়ে ওঠেন না কেন, যাকেই আপনারা উপাসনা করেন না কেন, যা কিছু পছন্দ করেন কিংবা আপনার নামের শেষ অংশ যা-ই হোক না কেন, আপনাদের জীবনের জন্য তা বাধা তৈরি করবে না।’
১৯৬০-এর দশকে সামাজিকভাবে রক্ষণশীল অস্ট্রেলিয়ায় একটি শ্রমজীবী রোমান ক্যাথলিক পরিবারে জন্ম নেন আলবানিজ। এমন সমাজে কেউ যেন তাঁকে ‘অবৈধ’ বলতে না পারে, সে জন্য শৈশবে আলবানিজকে বলা হয়েছিল, তাঁর বাবা কার্লোস আলবানিজ ইউরোপে এক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। বয়স ১৪ বছর হওয়ার পরই সত্যি কথা জানতে পারেন তিনি। তখন আলবানিজের মা জানান, তাঁর বাবা মৃত নন এবং তাঁর মা-বাবার কখনো বিয়ে হয়নি।