এবার মেক্সিকোর দিকে এগোচ্ছে হারিকেন বেরিল, রেড অ্যালার্ট জারি

জ্যামাইকার ক্ল্যারেনডন এলাকায় হারিকেন বেরিল আঘাত হানার পর লন্ডভন্ড হয়ে যাওয়া একটি ঘরছবি: রয়টার্স ফাইল ছবি

ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে গত কয়েক দিন আঘাত হানার পর ৩ মাত্রার শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হিসেবে মেক্সিকোর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে হারিকেন বেরিল। এর মধ্যেই মেক্সিকোর শীর্ষস্থানীয় পর্যটন এলাকাগুলোয় রেড অ্যালার্ট (জরুরি সতর্কতা) জারি করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টারের (এনএইচসি) দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার ভোরে ঘণ্টায় ১৮৫ কিলোমিটার গতিবেগে মেক্সিকোর ইয়ুকাতান উপদ্বীপে আঘাত হানতে পারে বেরিল। এর প্রভাবে ভয়াবহ জলোচ্ছ্বাস ও বিধ্বংসী ঢেউ উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে বলে সতর্ক করেছে এনএইচসি।

কোজুমেল, ইসলা মুজেরেস, তুলাম ও পুয়ের্তো মোর্লসের মতো উপকূলীয় পর্যটন এলাকার খুব কাছেই অবস্থান করছে বেরিল। এমন অবস্থায় মেক্সিকোর বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষাবিষয়ক সংস্থা থেকে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকদের ঘরের ভেতর কিংবা আশ্রয়কেন্দ্রে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

এনএইচসির তথ্যমতে, হারিকেন বেরিল মেক্সিকোর পর্যটন শহর তুলাম থেকে ২১৭ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থান করছে।

আবহাওয়াবিদেরা পূর্বাভাস দিয়েছেন, হারিকেন বেরিলের প্রভাবে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। এর কারণে ভূমিধস ও বন্যা হতে পারে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেস ম্যানুয়েল লোপেজ ওব্রাদর।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রেসিডেন্ট লিখেছেন, কোনো রকম দ্বিধা করবেন না। অন্য সব জিনিস পুনরুদ্ধার করা যাবে। জীবন বাঁচানোটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

এর আগে ক্যাইমান দ্বীপপুঞ্জ ও জ্যামাইকায় তাণ্ডব চালায় বেরিল। তীব্র গতির ঝোড়ো বাতাসে সেসব এলাকায় ঘরবাড়ি লন্ডভন্ড হয়ে গেছে, উপড়ে গেছে গাছপালা।

স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানায়, জ্যামাইকা, গ্রেনাডা, সেন্ট ভিনসেন্ট ও গ্রেনাডিনস এবং ভেনেজুয়েলার উত্তরাঞ্চলে ঝড়ের কবলে পড়ে এ পর্যন্ত প্রায় ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। দ্বীপগুলোর সঙ্গে যোগাযোগব্যবস্থা স্বাভাবিক হলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

মেক্সিকোর পর্যটন এলাকাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় কানকুন। এটি কুইন্তানা রু প্রদেশের একটি শহর। সেখানকার গভর্নর মারা লেজামা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করা এক ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘পুরো প্রদেশ ঝড় মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিচ্ছে। চলুন, এর ক্ষয়ক্ষতি রোধ ও পরবর্তী সংকট মোকাবিলায় সব ধরনের পদক্ষেপ নিই। পুরো প্রদেশে বৃষ্টি ও ঝোড়ো বাতাস বয়ে যেতে পারে। এ সময় কারও ঘরের বাইরে থাকা উচিত হবে না।’

কানকুন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গতকাল বৃহস্পতিবার ১০০ ফ্লাইট বাতিল করা হয়। মেক্সিকো ছাড়তে পর্যটকদের টিকিটের জন্য হুড়াহুড়ি করতে দেখা গেছে।

২০২৪ সালের মৌসুমে আটলান্টিক অঞ্চলে সৃষ্টি হওয়া প্রথম হারিকেন বেরিল।

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমসফেরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন মে মাসের শেষের দিকে বলেছিল, চলতি বছরটি একটি ‘ব্যতিক্রমী’ হারিকেনের মৌসুম হতে পারে। এ সময় ৩ বা তার বেশি মাত্রার সাতটি ঝড় হতে পারে। সংস্থাটি এর জন্য প্রশান্ত মহাসাগরের লা নিনা প্রভাবের কথা উল্লেখ করেছে।