ভারত থেকে কিছু কূটনীতিককে ফিরিয়ে নিচ্ছে কানাডা
চলমান উত্তেজনার মধ্যে ভারত থেকে কয়েকজন কূটনীতিককে দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কানাডা সরকার। স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় কানাডার আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক দপ্তরের মুখপাত্র জ্যঁ-পিয়েরা গডবাউট এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
কানাডীয় সংবাদমাধ্যম ন্যাশনাল পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এক ই–মেইলে জ্যঁ-পিয়েরা গডবাউট লেখেন, ‘উত্তেজনা বৃদ্ধির জেরে বর্তমানে যে পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের কূটনীতিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা পদক্ষেপ নিচ্ছি। আমাদের কিছু কূটনীতিক সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমে হুমকি পাচ্ছেন।’
আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক দপ্তরের মুখপাত্র আরও লেখেন, ব্যবসা-বাণিজ্য ও অন্যান্য কার্যক্রম চালিয়ে যেতে ভারতে কানাডার বিভিন্ন অবস্থানে কানাডীয় কূটনীতিক ও স্থানীয় কর্মীরা চাকরি করছেন। সতর্কতা হিসেবে এই কূটনীতিকদের উপস্থিতির বিষয়টি সাময়িক সময়ের জন্য সমন্বয় করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
কানাডার মাটিতে শিখ সম্প্রদায়ের নেতা হরদীপ সিং নিজ্জরের হত্যাকাণ্ডের পেছনে ভারতীয় গোয়েন্দাদের হাত রয়েছে বলে চলতি সপ্তাহে অভিযোগ করেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। এর পর থেকেই ভারত ও কানাডার মধ্যে উত্তেজনার পারদ চড়তে থাকে। কূটনৈতিক দিক দিয়ে পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করে দুই দেশ।
গত ১৮ জুন ব্রিটিশ কলাম্বিয়া প্রদেশে একটি শিখ মন্দির থেকে বের হওয়ার পরপর হরদীপ সিংকে গুলি করে হত্যা করা হয়। তিনি খালিস্তান আন্দোলনের পক্ষে প্রচার-প্রচারণা চালাতেন। ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যে শিখদের জন্য আলাদা একটি রাষ্ট্র গঠনের জন্য তিন দশকের বেশি সময় আগে শুরু হয় এই আন্দোলন। ভারত প্রথম থেকেই এই আন্দোলনের বিরোধিতা করে আসছে।
এদিকে কিছু কূটনীতিককে ফিরিয়ে নেওয়া হলেও ভারতে কানাডার কূটনৈতিক কার্যালয়গুলো খোলা থাকবে বলে জানিয়েছেন জ্যঁ-পিয়েরা গডবাউট। কাকে কাকে ফিরিয়ে নেওয়া হবে, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি। গডবাউট বলেন, ‘কর্মীদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা রক্ষা করতে এবং ভারতে কার্যক্রম চালিয়ে যেতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেবে কানাডা।’
ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে কানাডার একটি হাইকমিশন রয়েছে। এ ছাড়া বেঙ্গালুরু, চণ্ডীগড় ও মুম্বাইয়ে দেশটির কনস্যুলেট রয়েছে। জ্যঁ-পিয়েরা গডবাউট বলেন, যেসব কানাডীয় কূটনীতিক ভারতে থেকে যাবেন, নয়াদিল্লি তাঁদের সুরক্ষায় কাজ করবে বলে আশা প্রকাশ করছে কানাডা সরকার।