রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্য ফাঁসে দোষী সাব্যস্ত কানাডার সাবেক গোয়েন্দাপ্রধান
রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্য ফাঁস করার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন কানাডার এক সাবেক গোয়েন্দাপ্রধান।
রয়্যাল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশের (আরসিএমপি) গোয়েন্দা ইউনিটের সাবেক এই প্রধানের নাম ক্যামেরন অর্টিস (৫১)।
গতকাল বুধবার ক্যামেরনকে দোষী সাব্যস্ত করেন জুরি। কানাডার তথ্য সুরক্ষা আইনে এই প্রথম দেশটির কোনো নাগরিককে দোষী সাব্যস্ত করা হলো। ক্যামেরনের ২০ বছরের কারাদণ্ড চেয়েছেন আইনজীবীরা।
গত জুরিরা বলেন, তথ্য সুরক্ষা আইন লঙ্ঘনের তিনটি অপরাধে ক্যামেরনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া এই আইন লঙ্ঘন চেষ্টার আরেকটি অভিযোগে তিনি দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। বিশ্বাসভঙ্গ ও কম্পিউটারের প্রতারণামূলক ব্যবহারের জন্যও তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।
ক্যামেরন যা করেছেন, তাকে কানাডার ইতিহাসের সবচেয়ে বড় রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা লঙ্ঘনের ঘটনাবলির একটি হিসেবে অভিহিত করা হচ্ছে।
রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্য ফাঁসের এই ঘটনা ‘পঞ্চনেত্র’ (ফাইভ আইস) নামের নেটওয়ার্কের সদস্যদের উদ্বিগ্ন করে তুলেছিল। এই নেটওয়ার্কের সদস্যদেশগুলো হলো—কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড। দেশগুলো নিজেদের মধ্যে গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান করে থাকে।
ক্যামেরনের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়, তার মধ্যে রয়েছে—তিনি ২০১৫ সালে তিন ব্যক্তির কাছে শ্রেণিবদ্ধ তথ্য (রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্য) প্রকাশ করেন। তিনি একই ধরনের আরেকটি কাজ করার চেষ্টা করেছিলেন।
ক্যামেরন তাঁর বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেন।
রয়্যাল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশ দীর্ঘ তদন্তের পর ২০১৯ সালে ক্যামেরনকে গ্রেপ্তার করে।
শুনানিতে আত্মপক্ষ সমর্থন করে ক্যামেরন আদালতকে বলেছিলেন, তিনি একটি অপ্রকাশিত গুরুতর হুমকি থেকে তাঁর দেশকে রক্ষার জন্য কাজ করছিলেন। এর অংশ হিসেবে লক্ষ্যবস্তুকে প্রলুব্ধ করার উপায় হিসেবে তিনি গোপন বিষয় সরবরাহের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তাঁকে গ্রেপ্তার করায় তাঁর জীবন শেষ হয়ে গেছে।
আইনজীবীরা বলেছেন, রাষ্ট্রীয় শ্রেণিবদ্ধ তথ্য প্রকাশ করার কোনো কর্তৃত্ব ক্যামেরনের ছিল না। তা ছাড়া তিনি কর্তৃপক্ষ অনুমোদিত কোনো গোপন অভিযানের অংশ হিসেবেও এই কাজ করেননি।