বয়স ৮০ পেরোলেই অধিকাংশ মানুষের জগৎ যেখানে ঘরের মধ্যে বন্দী হয়ে যায়, সেখানে ১০৪ বছর বয়সী মানুষের আকাশে ভেসে বেড়ানোর ঘটনা অনেকটা অবাস্তব মনে হতে পারে। তবে বাস্তবে এমনটাই ঘটেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের শিকাগো শহরে গত রোববার ডরোথি হাফনার (১০৪) বুঝিয়ে দিলেন, বয়স কোনো বিষয় নয়। মানসিক ও শারীরিক শক্তিই বড় কথা।
ডরোথিকে ওয়াকারে ভর করে চলাচল করতে হয়। তবে এবারই তিনি প্রথম স্কাইডাইভ (আকাশ থেকে ঝাঁপ) করছেন এমনটা নয়, ১০০ বছর বয়সে তিনি প্রথমবার কাজটি করেছেন।
মাত্র সাত মিনিটে স্কাইডাইভ শেষ করে শিকাগোতে মাটি স্পর্শ করার পর উপস্থিত সবাই তাঁকে অভিবাদন জানাতে ছুটে আসেন। ডরোথি বলেন, ‘বয়স শুধু একটি সংখ্যা মাত্র।’
এর আগে গত বছরের মে মাসে সুইডেনের ১০৩ বছর বয়সী ইনগেগার্ড লারসন সবচেয়ে বেশি বয়সী ব্যক্তি হিসেবে স্কাইডাইভ করে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম লেখান। এখন স্কাইডাইভ শিকাগো ডরোথির নাম গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে তোলার চেষ্টা করছে।
গত রোববার ডরোথি তাঁর ওয়াকারকে পেছনে ফেলে ছোট্ট উড়োজাহাজ স্কাইভ্যানে ওঠেন। সেখানে তাকে স্কাইডাইভিংয়ের জন্য প্রস্তুত করা হয়। স্কাইডাইভিংয়ের অপেক্ষায় থাকা অন্যরা তাঁকে বেশ উৎসাহ দিতে থাকেন। এবার তাঁর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র প্যারাস্যুট অ্যাসোসিয়েশনের সনদধারী একজন প্রশিক্ষক ছিলেন। ১৩ হাজার ৫০০ ফুট (৪,১০০ মিটার) ওপর থেকে তাঁরা ঝাঁপ দেন।
প্রশিক্ষকের সঙ্গে ডরোথির শরীর বেল্ট দিয়ে বাঁধা ছিল। উড়োজাহাজ থেকে ঝাঁপ দেওয়ার পর প্রথমে পাখির মতো ভাসছিলেন ডরোথি। এ সময় বাতাসে তাঁর রুপালি চুল উড়ছিল। ধীরে ধীরে তাঁরা নিচের দিতে নেমে আসেন।
অভিজ্ঞতা জানতে চাইলে ডরোথি বলেন, চমৎকার। ওপরে সবকিছু বিস্ময়কর লাগছিল। পুরো জিনিস ছিল আনন্দদায়ক, বিস্ময়কর। এর চেয়ে ভালো আর কিছু হতে পারে না।
তবে এতেই থেমে থাকতে চান না ডরোথি। দ্রুতই পরিকল্পনা করে ফেলেন ভবিষ্যতে তিনি কোন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে চান। আগামী ডিসেম্বরে তিনি ১০৫ বছরে পা দেবেন। তখন তিনি হট এয়ার-বেলুনে চড়তে চান। বলেন, ‘আমি কখনো এই বেলুনে চড়িনি।’