সৌদির ৭৬ জনের ভিসার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ‘খাসোগি নিষেধাজ্ঞা’
সৌদি আরবের ভিন্নমতাবলম্বী সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে গতকাল শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্র ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। আর এই নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রয়েছেন সৌদি আরবের ৭৬ নাগরিক। মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদনে এ হত্যাকাণ্ডের জন্য সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান অনুমোদন দিয়েছে উল্লেখ করা হলেও নিষেধাজ্ঞার তালিকায় তাঁর নাম রাখা হয়নি।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভিসার ওপর এই নিষেধাজ্ঞাকে ‘খাসোগি নিষেধাজ্ঞা’ বলে অভিহিত করেছে।
বাইডেন প্রশাসনের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, ‘এর উদ্দেশ্য হলো সম্পর্ক পুনরুদ্ধার করা, সম্পর্কে ফাটল তৈরি করা নয়।’
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয় সৌদির সাবেক গোয়েন্দা উপপ্রধান আহমেদ আল-আসিরি ও সৌদি রয়াল গার্ডের র্যাপিড ইন্টারভেনশন ফোর্স (আরআইএফ) কর্মকর্তাদের ওপর এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। মার্কিন তদন্ত প্রতিবেদনে খাসোগির হত্যাকাণ্ডের জন্য আরআইএফকে বিশেষ করে দায়ী করা হয়।
আর্থিক নিষেধাজ্ঞার তালিকায় যুক্তরাষ্ট্রে সৌদি নাগরিকের সম্পদ স্থগিত করা হবে। একই সঙ্গে কোনো মার্কিন নাগরিক তাদের সঙ্গে লেনদেন করতে পারবে না।
অর্থমন্ত্রী জেনেট ইয়েলেন এক বিবৃতিতে বলেন, যাঁরাই এই জঘন্য হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, তাঁদের অবশ্যই দায় নিতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্র দেশটির নতুন নীতিমালার আওতায় সৌদি আরবের ৭৬ নাগরিকের ওপর ভিসা সীমাবদ্ধতা আরোপ করেছে। নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর সেই সব ব্যক্তি এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারবে, যাঁরা কোনো দেশের সরকারের পক্ষে নির্বাসিত বা নির্বাসিত হতে পারেন এমন সাংবাদিক, অ্যাক্টিভিস্ট বা অন্য ব্যক্তিকে নিপীড়ন, হয়রানি, নজরদারি, হুমকি বা ক্ষয়ক্ষতিসহ গুরুতর কর্মকাণ্ড পরিচালনা করবেন বা দেশের বাইরে গিয়ে ওই ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কাজ করবেন।
যুক্তরাষ্ট্রের পরররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমাদের সীমান্তের মধ্যে সবার নিরাপত্তার স্বার্থে, অন্য কোনো দেশের সরকারের পক্ষে অপরাধীরা নির্বাসিতদের টার্গেট করে আমেরিকার মাটিতে ঢুকতে পারবে না।’
বাইডেন প্রশাসন জানিয়েছে, এই নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সৌদি আরবের সঙ্গে ভবিষ্যতে সম্পর্ক কেমন দেখতে চায়, সেই সুস্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছে।
সৌদি যুবরাজের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী জেনেট ইয়েলেন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র সাধারণত কোনো দেশের শীর্ষ নেতার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে না।’