‘সারপ্রাইজ’ দিতে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে পড়লেন ট্রাম্প
হাসপাতালের বাইরে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়েছেন করোনাভাইরাসে সংক্রমিত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভিডিওতে দেখা গেছে, ট্রাম্প মাস্ক পরে গাড়িতে বসে আছেন। হাত নাড়ছেন সমর্থকদের উদ্দেশে।
ট্রাম্পের এমন কাজ নিয়ে শুরু হয়েছে সমালোচনা। ওয়াল্টার রিড হাসপাতালের একজন চিকিৎসকও উদ্বেগ জানিয়েছেন। ট্রাম্প অবশ্য বলছেন অন্য কথা। ট্রাম্প টুইটে ভিডিওতে বলেন, সমর্থকদের তিনি 'সারপ্রাইজ' দিচ্ছেন। ট্রাম্প আরও বলেন, সংক্রমিত হয়ে কোভিড ১৯ রোগ নিয়ে তিনি অনেক জেনেছেন। স্কুলে গিয়ে জানার মতো করে জেনেছেন। বিষয়টি সবাইকে জানাবেনও বলেন ট্রাম্প।
ভিডিওতে দেখা যায়, কোভিডে আক্রান্ত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের গাড়িতে সিক্রেট সার্ভিসের লোকজনও রয়েছেন। স্বাস্থ্যকর্মীরা তাঁদের নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন।
প্রেসিডেন্সিয়াল হিস্টোরিয়ান মাইকেল বিশ্লস এক টুইটে বলেন, কেন একজন অসুস্থ প্রেসিডেন্ট সমর্থকদের অভিবাদন জানাতে হাসপাতালের বাইরে যাবেন? গাড়ির মধ্যে থাকা সিক্রেট সার্ভিসের লোকজনকে কেন তিনি স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ফেলবেন ?
ওয়াল্টার রিড হাসপাতালের চিকিৎসক জেমস ফিলিপস ট্রাম্পের এমন মোটরযাত্রাকে উন্মাদনা বলেছেন। তিনি বলেন, গাড়ির মধ্যে থাকা প্রত্যেকের জীবন এতে ঝুঁকিতে পড়বে। ১৪ দিনের জন্য কোয়ারেন্টিনে না থেকে রাজনৈতিক এমন নাটকের জন্য কেউ মারাও যেতে পারে বলে এই চিকিৎসক মনে করেন।
প্রেসিডেন্টের সার্বক্ষণিক সাংবাদিক পুলকেও তাঁর গতিবিধি সম্পর্কে জানানো হয়নি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের প্রতিটি গতিবিধি সম্পর্কে জানেন হোয়াইট হাউস করেসপন্ডেন্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা। সংগঠনটির প্রেসিডেন্ট জিকি মিলার এক বিবৃতিতে সংরক্ষিত প্রটোকল ছাড়া হাসপাতালের বাইরে প্রেসিডেন্টের এমন চলাচলকে আপত্তিকর বলেছেন।
হোয়াইট হাউসের ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি জাড ডিরি বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাঁর সমর্থকদের অভিবাদন জানাতে মোটর শোভাযাত্রায় যোগ দেন এবং এরপরই আবার হাসপাতালে ফিরে গেছেন।
কোভিড ১৯ এ সংক্রমিত হলে রোগীদের কমপক্ষে ১০ দিনের জন্য হলেও আইসোলেশনে থাকার নিয়ম মানা হয়। এ সময়টিতে তাঁরা অন্যদের সংক্রমিত করার উচ্চ ঝুঁকিতে থাকেন। শুক্রবার সকালেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সংক্রমণের কথা জানানো হয়েছে। এরপর তাঁর উপসর্গ নাজুক বিবেচনা করেই হাসপাতালে স্তানান্তরিত করা হয়।
করোনাভাইরাসে যুক্তরাষ্ট্রে দুই লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ৭০ লাখের বেশি মানুষ সংক্রমিত। নিউইয়র্কসহ বিভিন্ন এলাকায় নতুন করে লকডাউন নিয়ে ভাবা হচ্ছে। নতুন করে সংক্রমণ দেখা দেওয়ায় বুধবার থেকে নিউইয়র্কের কিছু কিছু এলাকায় লকডাউনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে । এমন অবস্থায় করোনায় সংক্রমিত দেশের প্রেসিডেন্টের বেরিয়ে পড়া নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে হাসপাতালে নেওয়ার পর থেকেই বাইরে রাস্তায় তাঁর সমর্থকদের জড়ো হতে দেখা যায়। যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা গায়ে জড়িয়ে , কেউ কেউ মাস্ক পরে , কেউ কেউ মাস্ক না পরে পালাক্রমে ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্রুত সেরে উঠার জন্য স্লোগান দিচ্ছে। পতাকা মোড়া গাড়ির বহর নিয়েও হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকায় একের পর এক মোটর শোভাযাত্রায় যোগ দিচ্ছেন তাঁর সমর্থকেরা। বিভিন্ন নগরীতেও প্রেসিডেন্টের সুস্থতা কামনা করে এমন সমাবেশ ও প্রার্থনা সমাবেশ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।