ইরানের বিপ্লবী গার্ডকে সন্ত্রাসী তালিকা থেকে বাদ দিতে পারে যুক্তরাষ্ট্র
ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীকে বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠনের কালোতালিকা থেকে বাদ দেওয়ার চিন্তাভাবনা করছে যুক্তরাষ্ট্র। বিনিময়ে এলিট এই বাহিনীর লাগাম টেনে ধরবে—এমন নিশ্চয়তা দিতে হবে ইরানকে। বিষয়টির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র গতকাল বুধবার এসব কথা জানিয়েছে। খবর এনডিটিভির।
সূত্রটি জানায়, তেহরানের পক্ষ থেকে কোন ধরনের গ্রহণযোগ্য প্রতিশ্রুতির বিনিময়ে এ পদক্ষেপ নেওয়া হবে, সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেয়নি ওয়াশিংটন। গত ২০১৯ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসকে (আইআরজিসি) কালোতালিকাভুক্ত করেন। এতে খোদ নিজ দল রিপাবলিকান পার্টির সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। এবার ট্রাম্পের ওই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার চিন্তাভাবনা করছে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন।
অপর একটি সার্বভৌম সরকারের কোনো অংশকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে তালিকাভুক্ত করার এমন ঘটনা ছিল ওয়াশিংটনের জন্য প্রথম।ইরানের ক্ষমতাকাঠামোয় ইসলামি বিপ্লবী গার্ডের ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। এলিট সামরিক ও গোয়েন্দা বাহিনীর পাশাপাশি দেশটির বাণিজ্যিক খাতও নিয়ন্ত্রণ করে এই বাহিনী। তাদের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানোর অভিযোগ করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রটি বলেছে, আইআরজিসির আঞ্চলিক ও অন্যান্য ভূমিকার ক্ষেত্রে ইরানের একধরনের প্রতিশ্রুতি অথবা পদক্ষেপের বিনিময়ে সন্ত্রাসী তকমা তুলে নেওয়া যায় কি না, সেই চিন্তাভাবনা করছে বাইডেন প্রশাসন।
ইসরায়েলি ও মার্কিন সূত্রের বরাত দিয়ে বাইডেন প্রশাসনের এই ভারসাম্যমূলক পদক্ষেপ নিয়ে প্রথমবারের মতো খবর প্রকাশ করে মার্কিন সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওস।একাধিক সূত্র বলছে, ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি পুনর্জীবিত করার লক্ষ্যে চলমান অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় বিরোধপূর্ণ বিষয়গুলোর মধ্যে কালোতালিকাভুক্তি তুলে নেওয়া অন্যতম। ওই চুক্তিতে অর্থনৈতিক অবরোধ তুলে নেওয়ার বিনিময়ে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি সীমিত করার কথা বলা হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এককভাবে এই বৈশ্বিক চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেন এবং ইরানের ওপর অবরোধ আরোপ করেন। প্রতিক্রিয়ায় পারমাণবিক কর্মসূচি বাড়িয়ে দেয় ইরান। জো বাইডেন ক্ষমতায় আসার পর এই চুক্তি পুনর্জীবিত করার বিষয়ে জেনেভায় সংলাপ চলছে। অবরোধ তুলে না নেওয়া, ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি সীমিতকরণসহ যুক্তরাষ্ট্র নতুন শর্ত দেওয়ায় তা এখনো আলোর মুখ দেখেনি। তবে অগ্রগতির কথা জানিয়েছে দুই পক্ষই।
আইআরজিসিকে সন্ত্রাসী কালোতালিকা থেকে বাদ দেওয়ার সম্ভাবনার বিষয়ে জানতে চাইলে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নেড প্রাইস। তিনি বলেন, চুক্তি পুনর্জীবিত করার সংলাপে মূল আলোচনার বিষয় হচ্ছে অবরোধ তুলে নেওয়া।