যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের উদ্যোগ
শেখ মুজিবের 'বঙ্গবন্ধু' উপাধির সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে সভা
বাংলাদেশের উন্নয়নের স্বার্থে বঙ্গবন্ধু কন্যাকে আজীবন দল ও দেশের নেতৃত্বে থাকতে হবে। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের উদ্যোগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘বঙ্গবন্ধু উপাধিতে ভূষিত হওয়ার সুবর্ণজয়ন্তী’ উদ্যাপন উপলক্ষে এক বিশেষ আলোচনা সভায় বক্তারা এ কথা বলেছেন।
জ্যাকসন হাইটসের একটি পার্টি হলে ২৫ ফেব্রুয়ারি রাতে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, বাঙালি জাতির জন্য ২৩ ফেব্রুয়ারি এক গুরুত্বপূর্ণ দিন। ১৯৬৯ সালের এ দিনে বাংলাদেশের জনগণ জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধি দিয়েছিলেন। পরে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাঙালিরা তাদের সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করে স্বাধীনতা অর্জন করে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত এবং জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিশ্বে আজ বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল। বাংলাদেশের উন্নয়নের স্বার্থে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে আজীবন দল ও দেশের নেতৃত্বে থাকতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমানের সভাপতিত্বে ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদের সঞ্চালনায় এ অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক এম এ সালাম, উপদেষ্টা জয়নাল আবেদীন, সহ সভাপতি আক্তার হোসেন, সৈয়দ বসারত আলী, শামসুদ্দিন আজাদ ও লুৎফুল করিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মহিউদ্দিন দেওয়ান ও আব্দুল হাসিব মামুন, প্রচার সম্পাদক হাজি এনাম (দুলাল মিয়া), কোষাধ্যক্ষ আবুল মনসুর খান, কৃষি-বিষয়ক সম্পাদক আশরাফুজ্জামান, ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক জাহাঙ্গির হোসেন, প্রবাসী কল্যাণ সম্পাদক সোলায়মান আলী, উপ দপ্তর সম্পাদক আবদুল মালেক, কার্যকরী সদস্য শাহানারা রহমান, সামছুল আবেদীন, আলী হোসেন গজনবী, আবদুল হামিদ, মুক্তিযোদ্ধা সরাফ সরকার, নিউইয়র্ক স্টেট আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শেখ আতিকুল ইসলাম, নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মোর্শেদা জামান, সাইকুল ইসলাম, আওয়ামী লীগ নেতা কফিল চৌধুরী, হারুনুর রশিদ, শ্যামল কান্তি দাস, নান্টু মিয়া, গনেশ কিত্তনীয়া, মোস্তাক আহমেদ, যুক্তরাষ্ট্র শ্রমিক লীগের সহসভাপতি খান শওকত, যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগের আহ্বায়ক তারিকুল হায়দার চৌধুরী, যুগ্ম আহ্বায়ক হুমায়ুন আহমেদ চৌধুরী প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ, মহিলা লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুবলীগ, শ্রমিক লীগ, ছাত্রলীগ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
বক্তারা বলেন, বঙ্গবন্ধু উপাধি পাওয়া মহান এই নেতা তাঁর যৌবনের পুরোটা সময় পাকিস্তানি জেলে কাটিয়েছেন এবং হাসিমুখে মৃত্যুকে বরণ করে নিতে প্রস্তুত ছিলেন। ‘ঐতিহাসিক ১১-দফা আন্দোলনের ভিত্তিতে গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ১৯৬৯ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তান জেল থেকে মুক্ত করা হয়। তিনি আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আসামি হিসেবে কারাগারে বন্দী ছিলেন। ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ২৩ ফেব্রুয়ারি জাতির পক্ষে কৃতজ্ঞতা স্বরূপ শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধি দেয়।’ তৎকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডিইউসিএসইউ) ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক তোফায়েল আহমেদ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের (তৎকালীন রেসকোর্স ময়দান) বিশাল জনসভায় কারামুক্ত শেখ মুজিবুর রহমানের সম্মানে আয়োজিত জনসমাবেশে বাংলার জনগণের পক্ষে বঙ্গবন্ধু উপাধি ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে বঙ্গবন্ধুকে জাতির পিতাও ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ এই বাঙালি ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে পরিচিত হয়ে আসছেন। যার অর্থ জনগণের বন্ধু।
বক্তারা বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ছিল বাংলাদেশ একটি সমৃদ্ধিশালী রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকবে। কিন্তু ৭৫-এর ঘাতকেরা নিজ স্বার্থে বঙ্গবন্ধুকে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে দেয়নি। ঘাতকেরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে এ দেশের মানুষের ভবিষ্যৎকেও পিছিয়ে দিয়েছে।
বক্তারা সরকারের নানামুখী উন্নয়নের কর্মকাণ্ড তুলে ধরে বলেন, বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করে বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ার লক্ষ্যে জাতির পিতার জীবন ও আদর্শকে ধারণ করে বঙ্গবন্ধু কন্যা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তাঁর যোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে অপ্রতিরোধ্য গতিতে। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে চার মেয়াদের শাসনকালে গণতান্ত্রিক সুশাসন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, অর্থনীতি, তথ্যপ্রযুক্তি, যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিস্ময়কর উন্নতি বাংলাদেশকে আজ নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তরিত করেছে। যা আগামী ২০২১ এ মধ্যম আয়ের দেশ ও ২০৪১ এ উন্নত দেশে পরিণত করবে।
অনুষ্ঠান শেষে কেক কেটে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদের জন্মবার্ষিকী পালন করা হয়।