যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক অ্যাপ ডাউনলোড বন্ধ হয়ে যেতে পারে ৪৮ ঘণ্টায়
যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক ও উইচ্যাট অ্যাপ ডাউনলোড করার সুযোগ ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এক চুক্তির বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাজি না হলে আগামী রোববার থেকে দেশটির বাসিন্দারা চীনের ওই অ্যাপ দুটি আর পাবেন না। এ কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য দপ্তর।
ভিডিও প্রচার বা প্রকাশের ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী অত্যন্ত জনপ্রিয় অ্যাপ টিকটক। আর বার্তা আদান-প্রদানে বেশ জনপ্রিয় উইচ্যাট। ট্রাম্প প্রশাসনের ভাষ্য, চীনের এই অ্যাপ দুটি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি। এই দুই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে চীন সরকারের কাছে চলে যাচ্ছে ব্যবহারকারীদের তথ্যউপাত্ত। তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে চীন ও অ্যাপ দুটি পরিচালনাকারী দুই প্রতিষ্ঠান। তাদের অভিযোগ, প্রস্তাবিত এই নিষেধাজ্ঞা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক নিষিদ্ধ করার বিষয়ে অনেক দিন ধরে হুমকি দিয়ে আসছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। একপর্যায়ে তিনি ঘোষণা দেন, যুক্তরাষ্ট্রের কোনো প্রতিষ্ঠান এই অ্যাপ কিনে নিয়ে পরিচালনা করলে তিনি নিষেধাজ্ঞা দেবেন না। শেষ পর্যন্ত মার্কিন প্রতিষ্ঠান ওরাকলের সঙ্গে অংশীদারত্বের ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্রে কার্যক্রম চালাতে সম্মত হয় টিকটকের মালিক-প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্স। সেটি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অনুমোদন করবেন কি না, তা এখনো নিশ্চিত নয়। তবে রোববারের সময়সীমার মধ্যেই তিনি বিষয়টি পর্যালোচনা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
এই সময়সীমা ট্রাম্প বেঁধে দিয়েছিলেন গত আগস্টে। তখন তিনি এক নির্বাহী আদেশে সই করেন। তাতে বলা হয়, ২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে টিকটককে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো কোম্পানির কাছে বিক্রি না করলে এই অ্যাপ নিষিদ্ধ করা হবে। এই আদেশ কার্যকর করার দায়িত্ব দেশটির বাণিজ্য দপ্তরের।
বিবিসি জানিয়েছে, বাণিজ্যমন্ত্রী উইলবার রস এক বিবৃতিতে বলেছেন, শেষ মুহূর্তে ট্রাম্প ওই চুক্তি অনুমোদন না করলে, রোববার থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দারা টিকটক ও উইচ্যাট কোনো প্ল্যাটফর্ম থেকেই আর ডাউনলোড করতে পারবেন না। মন্ত্রী বলেন, ‘প্রেসিডেন্টের নির্দেশনা মোতাবেক, আমেরিকান জনগণের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহে চীনের অপচেষ্টা বন্ধে আমরা গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছি।’
বাণিজ্য দপ্তর স্বীকার করেছে, উইচ্যাট ও টিকটক নিয়ে হুমকি কতটা, তা পুরোপুরি শনাক্ত করার মতো বিষয় নয়। কিন্তু উভয় প্রতিষ্ঠানই যে নেটওয়ার্কের কর্মকাণ্ড, অবস্থানের তথ্য এবং ইন্টারনেটে খোঁজাখুঁজির তথ্য সংগ্রহ করেছে, এটা নিশ্চিত।
যুক্তরাষ্ট্রে কয়েক মিলিয়ন ব্যবহারকারী রয়েছে টিকটকের। বাইটড্যান্স বলে আসছে, তারা টিকটক ব্যবহারকারীদের কোনো তথ্য চীনে রাখে না। সব তথ্য জমা রাখে যুক্তরাষ্ট্র ও সিঙ্গাপুরে। আর উইচ্যাটের মালিক-প্রতিষ্ঠান টেনসেন্ট বলেছে, তাদের অ্যাপে যেসব বার্তা আদান-প্রদান হয়ে থাকে, তার সবই ব্যক্তিগত। এক বিলিয়নের বেশি ব্যবহারকারী রয়েছে উইচ্যাটের। তবে চীনের বাইরে ব্যবহারকারীর সংখ্যা কত, তা নিশ্চিত নয়।